সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা শরবত হোসেন মোল্লাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা শাহানেওয়াজ ডালিমসহ ৩০ জনের নামে আদালতে উপস্থাপিত অভিযোগপত্রটি গৃহীত হয়েছে।
সোমবার (১৬ মে) দুপুরে সাতক্ষীরা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ রাকিবুল ইসলাম মামলার বাদি সবুজ হোসেন মোল্লার উপস্থিতিতে ও সম্মতিতে এ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলা ও ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের ৮ এপ্রিল আশাশুনির গদাইপুর বিলে মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরের দু’ কর্মচারিকে বেঁধে রেখে মাছ লুটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে ক্ষুব্ধহন গদাইপুর গ্রামের রাজাকার মোজাহার সরদারের ছেলে আ’লীগ নেতা শাহানেওয়াজ ডালিম। এরই জের ধরে ডালিমের দু’ভাই ও তাদের লোকজন ৯ এপ্রিল সবেবরাতের রাতে গদাইপুর ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরবত মোল্লা ও মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরে লুটপাট চালায়।
১০ এপ্রিল সকালে ওই মাছ চেয়ারম্যানের ভাই আহসান হাবিব টগর গদাইপুর মাছের সেটে বিক্রি করতে গেলে শরবত মোল্লার সঙ্গে বচসা বাঁধে। পরে সকাল নয়টার দিকে গদাইপুর গ্রামের পুরাতন কবরস্থানের পাশে শরবৎ মোল্লা, তার স্ত্রী শরিফা খাতুন, প্রতিবেশি আরিফা খাতুন, তুয়ারডাঙার সুবিমল বিশ্বাসসহ কয়েকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে ডালিম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা। ভাঙচুর করা হয় তাদের পাঁচটি বাড়ি। ১০ এপ্রিল দিবাগত রাত একটার দিকে শরবৎ খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহত শরবতের ছেলে সবজু বাবাকে হত্যার অভিযোগে ১১ এপ্রিল শনিবার রাতে ডালিমকে প্রধান আসামি করে ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলাটি ৭ মে গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। মামলার তদন্তভার পান গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জহিরুল হক। ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে শরবৎ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ডালিমকে ঢাকার খিলখেত এলাকার নিজস্ব বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
অবশেষে গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি শরবত মোল্লা হত্যা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জহুরুল হক আদালতে চেয়ারম্যান ডালিম, তার ভাই আব্দুস সালাম বাচ্চু, জুলফিকার আলী, ইউপি সদস্য অনুপ কুমার সানাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে ও ২৭ জনকে অব্যহতি দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তী ধার্য দিনে আদালত অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি বাদিকে অবহিত করতে বলে ১৬ মে দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ি বাদি সবুজ হোসেন মোল্লা সোমবার আদালতে হাজির হয়ে অভিযোগপত্র আমলে নিতে তার কোন আপত্তি নেই বলে আদালতকে অবহিত করেন।
শরবত হত্যা মামলাটির অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর আদেশ সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরার আদালত পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবর রহমান।
খুলনা গেজেট/ এস আই