খুলনার আলোচিত শিশু অঙ্কিতা দে হত্যা মামলার রায় আজ বুধবার। খুলনা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মতিউর রহমান এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে ১৩ জুন আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য আদালত এ দিন নির্ধারণ করে দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি দুপুর ১২ টার দিকে দৌলতপুর থানার পাবলা বণিক পাড়ার মৌচাক টাওয়ারের সামনে থেকে অঙ্কিতা দে ছোয়া হারিয়ে যায়। এসময় তার পরনে ছিল গোলাপি রঙের সোয়েটার। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও পোস্ট দেওয়া হয়। তবে তার কোন সন্ধান মেলেনি। ২৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বাথরুম থেকে তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে এ ঘটনায় স্কুলছাত্রী অঙ্কিতার বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরী ও পরবর্তীতে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী রিক্তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোন তথ্য না পেয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। পরে অঙ্কিতা দের হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ পরে পাবলা বণিকপাড়া এলাকার বিনাপানি ভবনের মালিকের ছেলে প্রীতম কুমার রুদ্রকে গ্রেপ্তার করে। পরে রহস্যের জট খুলতে শুরু করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় নিজের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
সেখানে প্রীতম রুদ্র স্বীকার করে, ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি শুক্রবার সাড়ে ১২ টার দিকে মৌচাক টাওয়ারের পাশে অঙ্কিতা দে খেলতে দেখি। পরে তাকে কম্বল দেওয়ার কথা বলে ছাদে নেওয়া হয়। এরপর চিলেকোটার ঘরের সামনে নিয়ে অঙ্কিতার শরীর স্পর্শ করলে সে চিৎকার করে উঠে। তখন ধাক্কা দিলে দেওয়ালের সাথে আঘাত পেয়ে শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে ধর্ষণ করে প্রীতম। এরপর ছাদে কাপড় শুকানো দড়ি দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। লাশটি গুম করার জন্য বস্তার মধ্যে রাখা হয়। বস্তায় তার শরীরের রক্ত লেগে থাকলে তা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলা হয়। নীচ তলার গ্যারেজের পাশে বেসিনের নীচে লুকিয়ে রাখা হয়। এরপর বস্তাটি বেসিনের নীচ থেকে সরিয়ে বাথরুমের ভেতর রেখে দিই। যেটি বাড়ির নীচ তলায় ভাড়া দেওয়া মেক ওভার বিউটি পার্লারের লোকেরা ব্যবহার করত। পরবর্তীতে গন্ধ বের হলে আমার মামা স্যানেটারী মিস্ত্রি মো: মানিককে ডেকে গ্যারেজের নীচে বাথরুমের পাশের স্টোর রুম থেকে মালপত্র আনতে গেলে বাথরুমে রাখা বস্তাটি দেখে তার বাবাকে খবর দেয়।
২০২১ সালে ৩০ জানুয়ারি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আহমেদ উল্লিখিত জবানবন্দি রেকর্ড করেন। একই বছরের ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মিজানুর রহমান প্রীতম রুদ্রকে আসামি করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
খুলনা গেজেট/এসজেড