আলু ও পেঁয়াজের দাম নিয়ে খুলনার বাজারে অস্থিরতা বাড়ছেই। কোন বাজারেই নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যে সরকার নির্ধারিত দাম মানা হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, নির্ধারিত মূল্যের কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্য দুটি। অতিরিক্ত দামের কারণে ক্রেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। স্বল্প ব্যবধানের বাজারগুলোতে দ্রব্যমূল্যের রকমফের।
নগরীর সান্ধ্যবাজার ও গল্লামারি বাজার সরেজমিনে দেখা যায়, এ দুটি বাজারে দেশী পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। অথচ সোমবার (৩০ অক্টোবর) এই বাজার গুলোতেই দেশি পেয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে।
খুবি শিক্ষার্থী খাইরুজ্জামান খোকা এসেছিলেন গল্লামারীর কাঁচা বাজারে, তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, গত দুইদিন আগে আমি পেঁয়াজ কিনেছি ১২০ টাকা কেজি দরে। আজ সেই পেঁয়াজ ১৪০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা কিভাবে বাড়ে সেই প্রশ্ন কার কাছে করব। সরকার দাম বেধে দিয়েছে কিন্তু বাজারে সেটা মানা হচ্ছে না। দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরেও বেশী দামে বিক্রি হওয়ায় সরকারের গাফিলতি।
এদিকে বাজার ভেদে পণ্যের দামে তারতম্য দেখা গিয়েছে। নগরীর খালিশপুর বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা এবং সন্ধ্যা বাজার ও গল্লামারি বাজারে একই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ মাত্র একদিনের মাথায় দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ বেড়েছে ১০ টাকা।
তবে আলুর দাম এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। নগরীর খুচরা বাজারগুলোতে আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে।
দৌলতপুর বাজারের খুচরা বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, কাঁচামালের বাজার খারাপ। বহু ক্রেতা দাম বেশি বলে না নিয়ে চলে যাচ্ছে। দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাম আমরা বাড়াই না। দাম বাড়ার পর আমাদের হাতে আসে। মাঠ থেকে মাল ওঠার পর দাম বেড়ে যায়। আমরা বাধ্য হয়ে বিক্রি করছি।
সোনাডাঙা পাইকারি বাজারের বিক্রেতা সজীব বলেন, ভারতের দাম বৃদ্ধির কারণে আমাদের এখানে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, আর সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার কারণে আমদানি ও কম হচ্ছে। সরকারের বেধে দেওয়া দামে বিক্রি করতে গেলে, লস হয়। তাই আমদানিকারকরা আমদানি করছে না।
তিনি আরও বলেন, কাঁচা মালের দাম প্রতিদিন ওঠানামা করে। যে দাম দিয়ে কিনি তার চেয়ে সীমিত লাভে বিক্রি করতে হয়। আলু পেঁয়াজের যে চাহিদা সেই পরিমাণ মাল বাজারে আসছে না। তাই প্রতিদিনই দাম বাড়ছে।
বিক্রেতা শাহেব আলি বলেন, বাজারে আমরা দাম বাড়াই না। আমরা যে দামে কিনি সেই দামে বিক্রি করতে হয়। বেশিরভাগ ক্রেতা দাম বেশি বলে কিনছে না। আমরাও মাল নিয়ে বিপদে আছি। এক দিনের ব্যবধানে ৩০ টাকা দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে, বিক্রেতারা কোন মন্তব্য করেননি।
খুলনা গেজেট/এনএম