সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকেরের প্রতি ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়েছে। এ সময় বন্ধু, স্বজন ও সহকর্মীরা অশ্রুচোখে তাকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন। সেখান থেকে বনানীর উদ্দেশে শেষযাত্রা করা হয়। জানাজা শেষে বিকেলে বনানী কবরস্থানের সবুজ মাটিতে শেষ নিদ্রা হবে তার।
শুক্রবার বেলা ১১টার পরে তার মরদেহ শেরেবাংলা নগরের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন তিনি।
জাদুঘর প্রাঙ্গণে আলী যাকেরের কফিন জাতীয় পতাকায় মুড়ে দেন জাদুঘরের ট্রাস্টিরা। সেখানে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন স্ত্রী সারা যাকের, ছেলে ইরেশ যাকের এবং আলী যাকেরের অভিনয় জীবনের বন্ধু সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
প্রথমে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। পরে একাত্তরের শব্দসৈনিক এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানিয়ে দেয়া হয় গার্ড অব অনার।
এরপর একে একে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিরা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট, ছায়ানট, থিয়েটার, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় তাকে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে মার যান আলী যাকের। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। গত চার বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে আসা এই অভিনয় শিল্পীর শরীরের দুদিন আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।
গত শতকের সত্তর থেকে নব্বইয়ের দশকে মঞ্চ আর টেলিভিশনে দাপুটে অভিনয়ের জন্য দর্শক হৃদয়ে স্থায়ী আসন নিয়ে আছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অভিনেতা।
তার স্ত্রী অভিনেত্রী সারা যাকের বলেন, অভিনয় বা কর্মজীবনের বাইরে ভীষণ এক সংসারী মানুষ ছিলেন আলী যাকের। তিনি নাটকের মত করেই সংসারটাকে ভালোবাসতেন। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াবেন, বাড়ি বানাবেন, এমন সব স্বপ্ন তার ছিল না। তিনি সবসময় এক মধ্যবিত্ত, রোমান্টিক জীবনযাপন করতে চাইতেন।
খুলনা গেজেট/কেএম