সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক এড. হাসনা হেনা খান কর্তৃক নিজেকে সাতক্ষীরা জজকোর্টের পিপি হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন মর্মে লিফলেট বিতরণ ও প্রচার-প্রচাণার প্রতিবাদ জানয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই প্রতিবাদ জানান।
লিখিত বক্তব্যে সিনিয়র আইনজীবী এ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার দ্বারা সংগঠিত এক গণবিপ্লবের মাধ্যমে প্রফেসর মোহম্মাদ ইউনুস এর নেতৃত্বে আমরা একটি অন্তবর্তী সরকার পেয়েছি। অন্তবর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের নিমিত্তে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনসহ রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা ফিরিয়ে আনার জন্য ইতিমধ্যেই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কার্যক্রম শুরু করেছেন।
উল্লেখিত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে বিচার বিভাগের মধ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সমগ্র বাংলাদেশের জেলা পর্যায়ে জি.পি, পি.পি সহ তদ্ সংক্রান্তে বিভিন্ন পদে যোগ্য ব্যক্তিদেরকে পদায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন মন্ত্রণালয় আইনানুগ ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বিশ্বাস করি অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রালয় বাংলাদেশের সমগ্র জেলায় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জিপি, পিপি এবং তদসংক্রান্ত অন্যান্য পদে নিয়োগদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন, যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরো বলেন, সরকারের এহেন কার্যক্রম চলমান থাকাকালে আমরা লক্ষ করছি যে, সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির একজন সদস্যা এড. হাসনা হেনা খান সাতক্ষীরা জজকোর্টের পিপি হিসাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন মর্মে ‘লিফলেট’ প্রচার করে বেড়াচ্ছেন, যা অনভিপ্রেত, দুঃখজনক এবং বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বটে। তার এই কার্যক্রম সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সকল আইনজীবী সহ বিচার অঙ্গনের প্রতি সর্বপরি বর্তমান সরকারের প্রতি একটি প্রহসন মূলক আচরণ বলে আমরা মনে করি। বিশেষ করে, বর্তমান সরকারের কোন প্রকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা প্রজ্ঞাপন ছাড়া এই ধরনের প্রচার কার্যক্রম সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টের একটি অপচেষ্টা ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা এখনো বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। আমরা মনে করি পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের জন্য এড. হাসনা হেনা খান একজন শিখন্ডি হিসাবে কাজ করছেন। যার দালিলিক প্রমান হচ্ছে-এড. হাসনা হেনা খান বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ মহিলা আ’লীগ কেন্দ্রী কার্য্য নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গত ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ এই কমিটির অনুমোদন দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের একজন রাজনৈতিক দায়িত্বশীল পদে থেকে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের ইতিবাচক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে তিনি এই-প্রচারপত্র বা লিফলেট সর্বস্তরে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। যা দুঃখ জনক ও নিন্দনীয়।
তিনি বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের ইতি বাচক ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার স্বার্থে এড, হাসনা হেনা খানের এহেন অনৈতিক ও বে-আইনী কর্মকান্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এএজে