নির্বাচনের আগে ব্যাপক শোরগোল তুলে চুপসে গেলো কিংস পার্টি খ্যাত তিনটি দল। তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ২৫৮ প্রার্থীর একজন বাদে জামানত হারিয়েছেন সবাই। এতে বাদ যাননি শমসের মবিন চৌধুরী এবং তৈমুর আলম খন্দকারও। বিশ্লেষকের মতে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশলের কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন তারা।
তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম ও বিএসপি নির্বাচনের আগে অনেক হাঁকডাক তুলে কি পেল কিংস পার্টির তকমা পাওয়া এই তিন দল? ভোটের ফলাফলের খাতায় হিসাবটা শুন্য। এই তিনটি দলের মধ্যে নিবন্ধন পেতে না পেতেই জাতীয় নির্বাচনে ৪৫ প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল বিএনএম। কিন্তু একজন বাদে জামানত হারিয়েছেন ৪৪ জনই। বিএনএমের মহাসচিবের দাবি, নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি না হলে কমপক্ষে ৩০টি আসন পেতেন তাদের প্রার্থীরা।
বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহ্জাহান বলেন, নির্বাচনে যাওয়া আমাদের ভুল ছিল না। এটা আমাদের একটা এক্সপেরিমেন্ট ছিল। বিএনএম আগামীর জন্য এবং দলকে মাঠে আরও বড়ভাবে গোছানোর সুযোগ পেল। বিএনএমের নীতি-নৈতিকতা সম্পর্কে জনগণ আরও পরিষ্কার হলো। এই দল সরকারের পকেটে নয়, এই দল কারও হয়ে কাজ করেনি। এটি স্পষ্ট হলো।
তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনের প্রতীক হাতে পেয়েই বলেছিলেন, দেশের একমাত্র বিরোধীদল তারাই। কিন্তু ভোটের পর বিরোধী দলের আসনে বসা দূরে থাক, তাদের ১৩৫ জন প্রার্থীর সবার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যে তালিকায় আছেন দলটির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার। এদিকে এমন ফল নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি তৃণমূল বিএনপি। তবে তৈমুর আলম মনে করেন, আওয়ামী লীগ-বনাম আওয়ামী লীগের এ নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে তৃণমূল বিএনপি কিংস পার্টি নয়।
তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, এটি নীল নকশার নির্বাচন। প্রমাণ হয়েছে আমরা কিংস পার্টি না। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে আমাদের ফলাফল শুন্য নয়। কারণ এর মাধ্যমে মার্কাটি প্রচার হয়েছে এবং এই দলটি সবাই চিনেছে।
এদিকে সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান-মহাসচিবসহ ৭৯ প্রার্থীর সবাই হারিয়েছেন জামানত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, দল তিনটি যে উদ্দেশ্য নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটে নেমেছিল, তা বুমেরাং হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, তারা ভেবেছিলো যে তাদেরকে সরকারের প্রয়োজন হবে। এটা আমাদেরও মনে হয়েছিল যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে তাহলে এসব দলকে ব্যবহার করবে। কিন্তু যখন আওয়ামী লীগ কৌশলগত পরিবর্তন আনলো, তারা তাদের নিজ দলের ব্যক্তিদেরকেই স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনের জন্য সুযোগ করে দিলো তখনই আসলে পুরো খেলাটা ফাইনাল (ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষে) হয়ে গেছে।
তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগের এবারের সূক্ষ্ম নির্বাচনী কৌশল, ভবিষ্যতের কিংস পার্টিদের জন্য বড় শিক্ষা।
খুলন্মা গেজেট/ টিএ