বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি সংলাপ করলেও উনার ক্ষমতা সীমিত। ভোট চুরির মাধ্যমে যারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় নিতে পারবেন, তাদের সমন্বয়ে জাতীয় চোর কমিশন গঠন করা হবে। বিগত সংসদ নির্বাচনে রাতের অন্ধকারে চোর ও নাইট গার্ডরা জনগনের ভোট চুরি করে নিয়ে গেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আর একবার সেই চেষ্টা করলে সারা দেশে ছাত্রদলের প্রতিরাধের মুখে এই সরকার পালাবার দরজা খুঁজে পাবেনা।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ৩ জানুয়ারী সোমবার খুলনায় অনুষ্ঠিত ছাত্র গণ জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। দুপুর ২টায় নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এ কর্মসূচি যৌথভাবে আয়োজন করে খুলনা মহানগর ও জেলা ছাত্রদল।
ছাত্রদল প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ইতিহাস ও সংগ্রামের ইতিবৃত্ত তুলে ধরে হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, স্বাধীনতা উত্তরকালে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার রহমানের হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রদল আদর্শবাদী রাজনীতির মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে স্থান করে নেয়। সকল ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন ছাত্রদলের জয়জয়কার। মাত্র ১৭ জন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু করা ছাত্রদল আজ এশিযার বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন।
বিএনপি নেতা সোহেল বলেন, এভারকেয়ার হসপিটালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে তিলে তিলে হত্যা করার জন্যই সাজানো পাতানো মামলায় সাজা দিয়ে নির্জন পরিত্যক্ত কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। জামিন পাওয়া তার অধিকার, কিন্ত বিচারপতিদের মাধ্যমে বারবার তার জামিন বাঁধাগ্রস্থ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের পাতি নেতাদের কাছেও কোটি, হাজার কোটি টাকা পাওয়া যায়। অথচ মাত্র দুই কোটি টাকার কথা তুলে শেখ হাসিনা খোঁটা দেন। দুর্নীতির মহাসমুদ্রে দাঁড়িয়ে আপনার মুখে এসব কথা মানায় না।
বেগম খালেদা জিযার শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে উল্লেখ করে হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, এ রক্তক্ষরণ তার শরীর থেকে শুধু নয়, এ গণতন্ত্রের, মানবাধিকারের, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ও ভোটাধিকারের শরীর থেকে রক্তক্ষরণ।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে খালেদা জিয়ার ভ্যানগার্ড দাবি করে তিনি বলেন, তার অসুস্থতায় তারেক রহমান দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন। তার নেতৃত্বে বিএনপির আগামী ৫০ বছরের নেতৃত্বের গ্যারান্টি তৈরি হয়েছে। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার পুন:প্রতিষ্ঠা করতে অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। সেই দায়িত্ব ছাত্রদলকেই নিতে হবে।
এরআগে বেলুন ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসুচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
ছাত্র গণ জমায়েতে সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু। প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল। এ সময় মঞ্চে অবস্থান করছিলেন বিএনপি নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল।
বক্তব্য রাখেন কাজী মো: রাশেদ, ফখরুল আলম, আমির এজাজ খান, তরিকুল ইসলাম জহির, শফিকুল আলম তুহিন, মনিরুল হাসান বাপ্পী, আবু হোসেন বাবু, ওমর ফারুক কওসার, পার্থদেব মন্ডল, মাজেদুল ইসলাম রুমন, আমিনুর রহমান আমিন, তানভির হাসান, তবিবুর রহমান সাগর, মো: রিয়াদ ইকবাল, হেলাল আহমেদ সুমন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহানগর ছাত্রদল আহবায়ক ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি। গোলাম মোস্তফা তুহিন ও মো: তাজিম বিশ্বাসের সঞ্চালনায় সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন আব্দুল্লা কিমিয়া সাদাত। সভার শুরুতে প্রয়াত ছাত্রদল নেতাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করা হয়।