চোখের পাতায় এখনো লেগে আছে মেসিদের ফুটবলজাদু। গত ১৮ জানুয়ারি কাতারের রাজধানী দোহায় লুসাইল স্টেডিয়ামে জাদু দেখানো সেই ফুটবলাররা বাংলাদেশে আসবে। জুনে বাংলাদেশে প্রীতি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনা বাংলাদেশে আসতে চাইলেও তারা শর্ত দিয়েছে।
বাফুফের সহসভাপতি আতাউর রহমান মানিক জানিয়েছেন আর্জেন্টিনা অনেক শর্ত দিয়েছে।’ কী শর্ত দিয়েছে—জানতে চাইলে তিনি সব কথা বলতেও পারলেন না। আরো কিছু আলোচনার দোহাই দিয়ে পাশ কাটিয়ে গেলেও জানা গেছে ১০০ কোটি টাকার বেশি দাবি করেছে আর্জেন্টিনা। এই টাকা ছাড়াও প্রীতি ম্যাচ আয়োজনে খরচ হতে পারে প্রায় পৌনে দুই শ কোটি টাকা। শর্ত মিলতে হবে। দুই দেশের ফুটবল সংস্থার শর্ত মিললে আর্জেন্টিনা বাংলাদেশে আসবে। বাংলাদেশে আসার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনাকে আনতে হলে তাদের যাওয়া-আসা, থাকা খাওয়ার সব খরচ দিতে হবে। সঙ্গে আর্জেন্টিনা যে অর্থের দাবি করে শর্ত দিয়েছে তা-ও পূরণ করতে হবে। এই অর্থ দেওয়ার শর্ত শুনেই চোখ কপালে বাফুফের। কারণ এত বড় অর্থ দেওয়ার মতো শক্তি বাফুফের নেই। মাহফুজা আক্তার কিরণ জানিয়েছেন স্পন্সর রেডি আছে।’ সহসভাপতি মানিক জানিয়েছেন স্পন্সরের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত করে ফেলব।’
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে আর্জেন্টিনাকে যদি একশ কোটি টাকার বেশি দিতে হয় আর প্রতিপক্ষ দলকে আনতেও খরচ করতে হবে। তাদেরকেও দিতে হবে থাকা-খাওয়া-যাওয়া-আসার খরচ। সব মিলিয়ে একটা খসড়া হিসাব দেখছে দেড়শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর্জেন্টিনার আসা না আসাটা নির্ভর করছে অর্থের ওপর। তবে বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে সরকারের শীর্ষ মহলের সঙ্গে গতকালই কথা বলে এসেছেন।
আর্জেন্টিনার কার বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলবে তা নিয়ে ভাবনা রয়েছে। বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক ভালো। আর্জেন্টিনাকে জাপানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলাতে চেয়েছিল বাফুফে। কিন্তু জাপান বাফুফের ডাকে না করে দিয়েছে। জুনে তাদের খেলা রয়েছে। জাপানকে না পাওয়ায় বাফুফে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কথা বলেছিল। কিন্তু কোরিয়াও একই কথা জানিয়েছে, আগেই কোরিয়ার ম্যাচ চূড়ান্ত হয়ে গেছে।
উপায় না পেয়ে মরক্কোর দিকে হাত বাড়াচ্ছে বাফুফে। কারণ মরক্কো এই মুহূর্তে বিশ্ব ফুটবলের আলোচিত নাম। তারা জানাবে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারবে কি না। এখন ইউরোপের ফুটবলে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা ব্যস্ত। ক্লাব ফুটবলে খেলছে। আর আর্জেন্টিনা বাংলাদেশে আসবে জুনে। ১২-২০ জুন ফিফার উইনডো রয়েছে। এই তারিখের মধ্যে খেলতে হবে। জুনের এই সময়টা কাজে লাগাতে আর্জেন্টিনা রাজি হয়েছে। কিন্তু সেই সময়টায় মেসি আসতে পারবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। মানিক খুব কড়া গলায় বললেন, ‘আসল খেলাই তো মেসিকে নিয়ে। মেসিই তো সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। সে-ই যদি না আসে তাহলে কীভাবে হবে। মেসি আসবে। মেসি আসবে।’ বাংলাদেশে আর্জেন্টাইন ভক্তরা মেসির জন্য পাগল। মেসি যেন তাদের প্রাণ। সেই প্রাণভোমরাকে আনতেই বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনের প্রাণপণ চেষ্টা।