রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ছয়তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত বেড়ে ৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২১ জন। নিহতরা হলেন- ওই ভবনের নিরাপত্তারক্ষী ওলিউল্লাহ, দোকান কর্মচারী রাসেল মিয়া, ভবনের চারতলার বাসিন্দা শিক্ষার্থী সুমাইয়া এবং বেড়াতে আসা রাসেলের আত্মীয় কবীর।
এর মধ্যে নিহত সুমাইয়া আক্তার ইডেন মহিলা কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পরিবারের সঙ্গে ভবনটির চারতলায় থাকতেন তিনি। আগুনে অচেতন হওয়ার পর মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ রাত সোয়া ৩টার দিকে হাজী মুসা ম্যানশন নামের ওই ভবনটির নিচতলায় আগুন লাগে। সকাল ৯টার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট প্রায় ৬ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ধারণা করা হচ্ছে, ভবনটির নিচতলায় রাসায়নিকের গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল জানান, এ পর্যন্ত ২১ জন আসছে, তাদের সবার কেমিক্যালের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। একজনকে আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৪ কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ফজলুর রশিদ।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আগুন লাগার পর পর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় ভবনের নিচতলা। ধীরে ধীরে ধোঁয়া উঠতে থাকে ওপরের দিকে। এতে ওপরের তলার বাসিন্দারা আগুনের বিষয়টি টের পান। এ সময় মানুষজন বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলেও ধোঁয়া ও আগুনের কারণে বের হতে পারেনি। তাঁরা ওপরের দিকে উঠতে থাকেন।
তবে ভবনের ছাদ তালাবদ্ধ থাকায় কেউ ওপরে উঠতে পারেননি। বিভিন্ন ফ্লোরে আটকে থাকা লোকজন চিৎকার করতে থাকেন। আটকে পড়া বাসিন্দারা বারান্দা ও জানালা থেকে মোবাইলের আলো জ্বেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। ভোর পৌনে ৫টার দিকে বিভিন্ন ফ্লোর থেকে অন্তত ১৩/১৪ জনকে ক্রেন ব্যবহার করে বের করে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাঁরা বারান্দার গ্রিল কেটে বাসিন্দাদের উদ্ধার করেন। ভোর পাঁচটার দিকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে একে একে আটকে পড়া সবাইকে উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
প্রাথমিকভাবে আগুনের কারণ জানা যায়নি। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০-১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান।
খুলনা গেজেট/কেএম/এনএম