পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা ও সব ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান ও চীন। চীনের হাইনান প্রদেশে শুক্রবার স্বাগতিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এ খবর দিয়েছে আনাদোলু ও সিনহুয়া।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এদিন দ্বিতীয় দফা কৌশলগত সংলাপে মিলিত হন। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয়, আ লিক ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন কোরেশি এবং ওয়াং ই।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার বিরোধিতা করে বহুমেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার প্রতি জোর সমর্থন জানান। তারা দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এ অ লে সৃষ্ট যে কোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহŸান জানান।
সাক্ষাতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের পক্ষে কথা বলেন। তিনি ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মার্কিন প্রচেষ্টারও ঘোর বিরোধিতা করেন।
এদিকে চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, শুক্রবার শুরু হওয়া দুই বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকের বড় অংশ জুড়ে ছিল চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) প্রসঙ্গ। শনিবার বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন কুরেশি ও ওয়াং। তাতে বলা হয়েছে, “শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, সহযোগিতাপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ার বিষয়ে দু’পক্ষই ঐকমত্যে এসেছে। পারস্পরিক সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে আ লিক বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে সহমত হয়েছে বৈঠকে।’’ তিব্বত ও শিনজিয়াংয়ের পাশাপাশি হংকং এবং তাইওয়ান নিয়ে চীনের সা¤প্রতিক কঠোর অবস্থানকেও যৌথ বিবৃতিতে সমর্থন জানিয়েছেন কুরেশি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিক কাশ্মীর বিবাদ’ প্রসঙ্গও ঠাঁই পেয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। সেখানে বেজিংয়ের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চীনা বিদেশমন্ত্রী জাতিসংঘ সনদ এবং নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবের উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি সম্পর্কে পাকিস্তান অবহিত করেছে চীনকে। অবস্থান, উদ্বেগ এবং সা¤প্রতিক জরুরি বিষয়গুলির কথাও জানিয়েছে।’’
লাদাখে সা¤প্রতিক চীনা অনুপ্রবেশের আবহে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামাবাদ-বেজিং বিবৃতি নয়াদিল্লিকে চাপে রাখার কৌশল বলেই মনে করছেন ভারতের কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ। পাশাপাশি, যৌথ বিবৃতিতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় চীন-পাক সহযোগিতার প্রসঙ্গও স্পষ্টতই ভারতের স্বার্থের পরিপন্থী বলে তারা মনে করে।
খুলনা গেজেট / এমএম