ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করা হলে তা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ থেকে ডনবাস অঞ্চলকে মুক্ত করার সুযোগ বাড়িয়ে দেবে।
শনিবার (১৮ জুন) জার্মান একটি সাপ্তাহিক পত্রিকাকে তিনি একথা বলেন। রোববার (১৯ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্লিন থেকে প্রকাশিত জার্মানির সবচেয়ে বেশি বিক্রিত সাপ্তাহিক বিল্ড অ্যাম সোনট্যাগকে জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে যে, এটি (ইউক্রেন যুদ্ধ) কয়েক বছর স্থায়ী হতে পারে। আমাদের ইউক্রেনকে সমর্থন বন্ধ করা উচিত নয়।’
‘এমনকি এই সহায়তা করতে যদি খরচ বেশিও হয়, তবুও না। কারণ শুধুমাত্র সামরিক সহায়তার জন্য নয়, জ্বালানি ও খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণেও খরচ বাড়ছে।’
চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর এই মহাসচিব বলেছিলেন, এই মাসের শেষের দিকে স্পেনের মাদ্রিদে ন্যাটোর একটি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে ইউক্রেনের জন্য সংস্থাটি একটি সহায়তা প্যাকেজে সম্মত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর সেটি হলে ইউক্রেনকে পুরনো সোভিয়েত-যুগের অস্ত্র থেকে ন্যাটোর আধুনিক মানের অস্ত্র সহায়তায় নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
রয়টার্স বলছে, চলমান এই যুদ্ধে শনিবার মস্কোর বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউক্রেন। বর্তমানে উভয়পক্ষ পূর্ব ইউক্রেনের প্রধান একটি শহরের কাছে লড়াই করেছে এবং ওই শহরটি ছাড়াও ডনবাস অঞ্চলের আরও একাধিক জায়গা রাশিয়ার গোলাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আওতায় এসেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
অবশ্য রাশিয়া ইউক্রেনে প্রায় তিনমাস ধরে সামরিক অভিযান চালালেও রুশ সেনারা প্রাথমিকভাবে প্রায় পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে হামলা পরিচালনা করে। তবে পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী মূল মনোযোগ দেয় ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়। মূলত তখন থেকে এই অঞ্চলে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে রুশ সেনারা।
আরও স্পষ্ট করে বললে, রুশ-ভাষী মানুষকে রক্ষা এবং রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রক্ষার কথা বলে দোনেতস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত ডনবাস ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আর এতেই রুশ সেনাদের ব্যাপক গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত হচ্ছে ইউক্রেনের এই শিল্প এলাকা।