দীর্ঘ ১৫ বছরের দাম্পত্যে ইতি টানলেন অভিনেতা আমির খান এবং পরিচালক কিরণ রাও। আমিরের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সূত্রে জানা গেল, এই মুহূর্তে কিরণ এবং পুত্র আজাদের সঙ্গে কার্গিলে রয়েছেন আমির। বিবৃতি জারি করার পরে একসঙ্গে ছবি তুলে তাঁদের বন্ধুকে পাঠিয়েছেন কিরণ। ভেঙে পড়েছেন তাঁদের অনুরাগীরা। ভেঙে পড়েছেন আত্মীয় সজন এবং বন্ধুবান্ধব। আমিরের বন্ধু আমিন হাজির সঙ্গে কথা বলল জাতীয় এক সংবাদমাধ্যম।
আমিন হাজি জানালেন, তিনি ও তাঁর পরিবার বেশ কিছু দিন ধরেই আমির-কিরণের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানেন। কিন্তু তারকা দম্পতি যে শনিবারই আচমকা বিবাহবিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করে দেবেন, সেটা তাঁরা কেউই ভাবতে পারেননি। তাই এখনও সেই খবরটা হজম করতে পারেননি হাজি। শনিবার সকালে কার্গিল থেকে ছবি পাঠানোর পরে হাজি তাঁর পরিবারকে সান্ত্বনা দেন, ‘‘ওঁরা এ ভাবেই থাকবেন। একসঙ্গে। কেবল ওঁদের বৈবাহিক সম্পর্ক থাকবে না।”
হাজি একাধিকবার তাঁর বন্ধু আমিরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি কিরণের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। হাজির কথায়, ‘‘তাঁদের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। আমরা জানি, অনেক ভেবেচিন্তেই তাঁরা দু’জনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেউই কোনও হুজুগে পদক্ষেপ করছেন না। মেনে নিতে হবে এটা আমাদের। কখনও কখনও দু’জন ভাল মানুষ পরস্পরের পরিপূরক হন না। আমি কখনও তাঁদের বলিনি যে, ‘তোমরা এটা করতে পারো না ইত্যাদি।’ কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয়, যদি বলতে পারতাম, তা হলে ভাল হত।”
আমির ও কিরণের বিচ্ছেদকে নিজের পরাজয় মনে হচ্ছে হাজির। তাঁদের বিয়ের সময়ে আমিরের ‘বেস্ট ম্যান’ হয়েছিলেন হাজি। আবার হাজির বিয়েতে আমির তাঁর ‘বেস্ট ম্যান’ হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ‘গ্রুমস ম্যান’ বা ‘বেস্ট ম্যান’ শব্দটি পাশ্চাত্য সংস্কৃতি থেকে নেওয়া। বিয়ের সময়ে বরের ডান-হাত হিসেবে গণ্য করা হয় ‘বেস্ট ম্যান’-কে।
এর আগে দীর্ঘ ১৫ বছরের দাম্পত্যে ইতি টেনে আমির খান এবং কিরণ রাও বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার সকালে দু’জনের পক্ষ থেকে নেটমাধ্যমে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয় সে কথা।
তাঁরা লিখেছেন, ‘এই ১৫ বছরের সুন্দর সফরে আমরা প্রচুর আনন্দ, উচ্ছ্বাস, অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। ভরসা, ভালবাসা এবং শ্রদ্ধার মধ্যে দিয়ে আমাদের সম্পর্ক বিকশিত হয়েছে। এবার আমরা জীবনের নতুন একটা অধ্যায় শুরু করতে চলেছি। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী হিসেবে নয়, আমাদের সন্তানের মা-বাবা এবং একই পরিবারের সদস্য হিসেবে।’
আচমকাই এই বিচ্ছেদ নয়। সময় নিয়ে পরিকল্পনা করেই দাম্পত্যে থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আমির এবং কিরণ জানিয়েছেন, আলাদা থাকলেও ছেলে আজাদের প্রতি সমস্ত কর্তব্য পালন করবেন তাঁরা। ব্যক্তি জীবনের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে না পেশাগত দিকেও। তাঁদের কথায়, ‘আমরা একসঙ্গে ছবি করব। আমাদের পানি ফাউন্ডেশনের কাজ এবং আরও অন্যান্য যে কাজগুলো আমরা করতে ভালবাসি, সেই সব কিছুই একসঙ্গে করব।’
খুলনা গেজেট/এমএইচবি