খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

আমার শেষ ডাচেচ

মূল : রবার্ট ব্রাউনিং, অনুবাদ : গাজী আবদুল্লাহেল বাকী

ঐ যে ডাচেচ, আমার শেষ স্ত্রী, ঝুলছে যার ছবি দেয়ালের ’পর,
মনে হচ্ছে সে যেনো জীবিত। ছবিটিকে এখন
আমি বলি একটি বিষ্ময়: ফারা প্যান্ডলপের হাত
পুরো একদিন ব্যস্ত ছিলো এ কাজে, এবং দেয়ালে সে দাঁড়িয়ে আছে।
আপনি কি দয়া করে বসবেন এবং দৃষ্টি মেলে দেখবেন তার দিকে?
আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই ফারা প্যান্ডলপের নাম বললাম। কারণ
আপনার মতো আগন্তুকেরা কখনো পরখ করতে পারে না
অঙ্কিত অবয়ব, এর উৎসুক ও আবেগপূর্ণ চাহনীর গভীরতা,
কিন্তু তারা আমার দিকে ফিরে তাকাতো (কিন্তু অন্য কেউ
আপনার জন্য ছবিটির পর্দা সরিয়ে দেয়নি কিন্তু আমি দিয়েছি)
এবং মনে হতো তারা আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারে, যদি সাহস করতো,
কেমনভাবে এ ধরণের এক মোহিনী পলক হয়েছিলো স্ফুটিত ; যাহোক আপনি
কিন্তু প্রথম ব্যক্তি নন আমার দিকে ফিরে এরূপ জিজ্ঞেস করতে।

মহাশয়, এটা কেবলমাত্র তার স্বামীর উপস্থিতি
ডাচেচের চিবুকদ্বয়কে আনন্দে উৎফুল করেনি, সম্ভবত:
ফারা প্যান্ডলপ এক সুযোগে বলেছিলো, ’আমার স্ত্রীর লম্বা
গাউন তার কজ্বির ওপর অতিরিক্ত ছড়ানো অবস্থায় ছিলো’,
অথবা ’অংকন নিজে কখনো অবশ্য আশা করতে পারে না
তার গলার ওপর যে ম্রিয়মাণ আরক্ত গড়িয়ে গেছে তা পুনঃ
ফুটিয়ে তুলতে’ : এ ধরণের বাজে ব্যাপার কেবলমাত্র
সৌজন্যমূলক বিষয় ছাড়া আর কিছুই নয়, সে চিন্তা করেছিলো
তার মুখমÐল আনন্দে উৎফুল হওয়ার এটাই অধিক কারণ।
তার একটি হৃদয় ছিলো  এ কথা কেমনে বলি?
যা যতো শীঘ্র হতো আনন্দিত, হতো ততো সহজে প্রভাবিত;
সে যে জিনিষের প্রতি দৃষ্টিপাত করতো, তাই সে পছন্দ করতো
এবং তার দৃষ্টি সর্বত্র আবর্তিত হতো। মহাশয়,
তার নিকট সব কিছু ছিলো সমান! তার বুকের সৌন্দর্যের প্রতি আমার ¯তুতি
পশ্চিমে দিনের আলোর অন্তর্ধান, কোনো কেতাদুরস্ত রমণীমোহনের
তার জন্যে বাগান হতে চেরীফুল আনায়ন, প্রাসাদ উদ্যানে
সাদা খচ্ছরে চড়ে বেড়ানো  এ সব কিছু তার নিকট হতে একই
প্রশংসা পেতো ও কমপক্ষে সে একইভাবে আরক্তিম আভায় ফুটে উঠতো।
সে ধন্যবাদ দিতো মানুষকে, ভালো! কিন্তু ধন্যবাদ দিতো কোনো রকমে
আমি জানিনা কেমন করে  সে তুলনা করতো আমার নয়শ’ বছরের পুরানো
নাম করা উপহারকে যে কোনো ব্যক্তির দেয়া উপহারের সাথে।
এ ধরণের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে
অভিযোগ করা হীনমন্যতার পরিচয় নয় কি?

এমনকি যদি আপনার বক্তব্য প্রকাশে দক্ষতা থাকে
(যা আমার নেই) আপনার ইচ্ছাকে এরূপ একজনের নিকট
পরিষ্কার তুলে ধরতে, এবং বলুন ’ঠিক তোমার এটা অথবা সেটা
আমার মধ্যে বিরক্তি উৎপাদন করেছে; এখানে তুমি সকল ভদ্রতা,
অথবা সৌজন্যের সীমা লংঙ্ঘন করেছ’ এবং যদি তাকে
সংশোধনের জন্য পরামর্শ দেয়া হয় এবং অসদাচরণের জন্য সে
ক্ষমা প্রার্থনাও করতে পারে, সত্য; Ñ কিন্তু এগুলো তাকে বোঝাতে
মর্যাদা হানিকর ছাড়া কিছুই নয়; এবং আমি কখনো নীচে নামতে পছন্দ করি না।
হাঁ, মহাশয়, সে নিসন্দেহে হাসতো যখন আমি তার
পাশ দিয়ে যেতাম; কিন্তু কেউ কি ঐ একই হাসি উপভোগ করা
ছাড়া তার নিকট দিয়ে অতিক্রম করতে পেরেছে? এগুলো ঘটেছিলো,
আমি আদেশ দিলাম; তখন সব হাসি একসাথে নিরব হয়ে গেলো। দেয়ালে সে দাঁড়িয়ে
যেন সে জীবিত। আপনি কি অনুগ্রহ করে উঠবেন? আমরা নীচ তলায়
এরপর আরো ছবি দেখবো। আমি পুনঃ উল্লেখ করতে চাই যে,
আপনার প্রভু কাউন্টের বদান্যতা সর্বজনবিদিত এবং এটাই যথেষ্ট
যে যৌতুকের জন্য আমার নায্য দাবী উপেক্ষিত হবে না;
যদিও আমি আমার উদ্দেশ্যের কথা আগেই বলেছি
যে তার কন্যাই আমার প্রধান আকর্ষণ।
চলুন, নীচে নামা যাক, মহাশয়, দেখুন নেপচুনের মূর্ত্তি
যা একটি সাগরঅশ্বকে পোষ মানাচ্ছে, চিস্তা করুন এটা একটা বিরল শিল্প
যা ইনসব্রাকের ভাষ্কর ক্লাউস ব্রোঞ্জের ’পর আমার জন্য খোদাই করেছে।

 




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!