বাংলাদেশের শিল্পের নগরী কোনটা তুমি বলোনা?
এ যে আমার গর্বের ভূমি, এই তো আমাদের খুলনা।
বহু ঐতিহ্যের স্বাক্ষর এখানে, আছে অনেক পুরাকীর্তি
জন্মেছে অনেক মহীয়ান-মহীয়সী, আছে তাঁদের মহাকীর্তি।
শুয়ে আছে হেতা বহু আউলিয়া, আছে অনেক সাধক, সুফী
কর্মে ছিলেন সুউচ্চ মহান, যদিও ছিলেন তাঁরা মানুষরূপী।
বহু নামে বহু নদী আছে বহমান, খুলনার কোল ঘেঁষে
মনে হয় যেন পরম মমতায়, মায়ের আঁচল যে বিছায়েছে।
আছে রূপসা, আছে আঠারোবাঁকী, কাজীবাছা, ডাকাতিয়া
আছে ভৈরব, ময়ুর, পশুর, শিবসা, আরো আছে আড়পাঙ্গাসিয়া।
নদীগুলো যেন জড়িয়ে রেখেছে পরম মমতার আদরে
পলিমাটি দিয়ে দুকূল ছাপিয়ে শেষে, গিয়ে মেশে বঙ্গোপসাগরে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধেও ছিল হেথা, অনেক রক্ত ঝরা ইতিহাস
‘শিরোমণির যুদ্ধ’ নামে ঘটেছিল তান্ডব, হয়েছিল সর্বনাশ।
বুক পেতে দিয়ে রুখেছিল সেদিন পাকবাহিনীদের আগ্রাসন
খুলনাবাসী হয়ে আমিও গর্বিত, হটিয়ে দিয়ে সেই দুঃশাসন।
এখানে আছে বধ্যভূমি, যেখানে ঘুমিয়ে আছে বহু বীর শহীদেরা
আছে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের মাজার, ভুলে যাবে তাঁকে, কারা?
এই মাটিতেই ঘুমিয়ে আছে, মুসলিম সাধক, পীর খানজাহান
দেখাতে আলোর পথ ছেড়ে নিজ ভূমি, গড়েছেন এখানে আবাসন।
সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি চাষে ভরে ওঠে আমাদের মন।
গর্বিত মোরা, আমাদেরই আছে, বিশ্ব ঐতিহ্যের ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন।
এ বনে আছে বিখ্যাত শার্দূল, রয়েল বেঙ্গল টাইগার
আছে মাছ, মধু, কাঠ, গোলপাতা দিয়েও হচ্ছে বহু রোজগার।
শিল্পের শহরে শিল্প কারখানায়, বহু কর্মীর হয়েছে সংস্থান
পর্যটনেও এগিয়েছে ঢের, তাতে বেড়েছে খুলনার মান।
সহজ, সরল, আবেগী, মানবিক, ও আতিথেয়তায় পরিপূর্ণ
ঝাঁপিয়ে পড়ে পরোপকারে, করে দিয়ে নিজ দর্পচুর্ণ।
এত সম্পদ, এত গৌরব পেয়ে আমি, সৃষ্টিকর্তাকে স্মরি
খুলনার মাটি, সবচেয়ে খাঁটি, এসো খুলনার জয়গান করি।
(লেখকঃ সাবেক প্রধান শিক্ষক, সিটি গার্লস স্কুল, খুলনা।)
খুলনা গেজেট/ এস আই