সম্প্রতি বল হাতে বেশ ছন্দে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অনবদ্য পারফরম্যান্সে একাদশের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বল হাতে ছন্দপতন মিরাজের। প্রোটিয়াদের ৩১৩ রানের মধ্যে আটকে দিয়ে নিজের প্রথম ৪ ওভারেই খরচ করেন ৩৪ রান। বোলিংয়ে মিরাজের বিকল্প না থাকায় বেশ বিপাকেই পড়েন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পরে সেই মিরাজেই রক্ষা টাইগারদের।
শেষ ১১ ওভারে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ১১৫ রান। তখন ব্যাট হাতে আগ্রাসী ভূমিকায় ডেভিড মিলার। ৩৯ বলে ৫১ রানে ব্যাট করছেন তিনি। শরিফুল ইসলামের চোট, বাকি বোলারদের ব্যবহার করে ফেলেছেন তামিম, মিরাজ ছাড়া পঞ্চাশ ওভারের কোটা পূরণ করা কষ্টসাধ্য। এমন সময় ইনিংসের ৪০তম ওভারের আগে অধিনায়ক তামিমকে মিরাজ অনুরোধ করেন বল দেওয়ার জন্য, ম্যাচ জিতিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
৩৮ রানে ম্যাচ জয়ের পর অধিনায়ক তামিম বলেন, ‘সব দলে মিরাজের মতো ক্যারেক্টার প্রয়োজন আছে। কারণ, প্রথম ৪ ওভারে ৪০ (৩৪) রান দেওয়ার পর সে আমার কাছে এসে বলে, আমাকে বল দেন, আমি খেলা বদলে দেব। সে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিল। এটি অধিনায়কের কাজ সহজ করে দেয়, যখন আপনার খেলোয়াড়রা নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাসী থাকে।’
সঙ্গে যোগ করেন তামিম, ‘সবসময় হয়তো ফল আমাদের পক্ষে আসবে না, কখনো কখনো আমাদের বিপক্ষেও যেতে পারে। তবে আমি খুব খুশি যে আত্মবিশ্বাসটা তার মধ্যে আছে। এমন চাপের মধ্যে ডানহাতির সামনে ছোট বাউন্ডারিতে বোলিং করা, উইকেট এনে দেওয়া, আমার মতে, সেও আমার ম্যান অব দ্য ম্যাচ।’
পরের ৫ ওভারে মাত্র ২৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন মিরাজ। তার মধ্যে ফেরান বিধ্বংসী মিলারকে। শেষদিকে মিরাজের এমন অনবদ্য পারফরম্যান্সের কল্যাণে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের বিপক্ষে প্রথমবার কোনো ম্যাচ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ দল।
গর্বিত অধিনায়ক তামিম বলছিলেন, ‘অবশ্যই এটি অনেক বড় জয় আমাদের জন্য। দক্ষিণ আফ্রিকায় (দ্বিপাক্ষিক সিরিজে) আগে কখনও জিতিনি, তাই এটি বিশেষ জয়। ছেলেদের নিয়ে অনেক গর্বিত, সবাই যেভাবে খেলেছে। শুরুতে লিটন ও আমি ভালো একটা ভিত গড়ে দিয়েছি। সাকিব ও ইয়াসির অবিশ্বাস্য খেলেছে। আমার মতে, ইয়াসিরের ইনিংস স্পেশাল ছিল। যেভাবে সে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের সামলেছে। শেষে মিরাজের দুই ছক্কা, আফিফের একটি করে চার-ছক্কা, রিয়াদ ভাইয়ের ২৫ রান সবকিছুই গুরুত্ব বহন করে।’