খুলনার কয়রা উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে আমন আবাদ রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাঠে কাজ করছেন তারা। কেউ জমি থেকে ধানের পাতা তুলছেন, কেউ ট্রাক্টর/পাওয়ার টি লার দিয়ে জমি চাষ করছেন, আবার শ্রমিক দিয়ে জমিতে চারা রোপন করছেন। তবে সার, ডিজেল কীটনাশক, ও শ্রমিকের দাম বৃদ্ধিতে চিন্তিত তারা। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে কোথাও কোথাও কৃষকদের বীজ তলা নষ্ট হয়ে গেছে।
কয়রাও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমী ১৭ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপনের লক্ষমাত্র রয়েছে এবং ৪ হাজার ১২৫ জন ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষকের মাঝে ৫ কেজি বীজ ধান ও ২০ কেজি করে রাসায়নিক সার বিতারণ করা হয়েছে।
বাগালী ইউনিয়নের বামিয়া বিলের কৃষক মো. আবুল হাসান গাজী বলেন, আমি সারাবছর ধান চাষাবাদ করি। এবছর আমন মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপনের কাজ শেষ করে উঠেছে। বাম্পার ফসল হওয়ার আশা আছে।
সাতহালিয়া পূর্ব বিলের কৃষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি এবছর ৩২ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করবো সেজন্য ধানের পাতার জন্য আমি ২৪ বস্তা বীজ ধান ফেলাইছিলাম জলবন্ধতার কারণে আমার ধানের পাতা সব নষ্ট হয়ে গেছে। সোমবার সকালে বিলে আবার নতুন করে ধানের পাতা ফেলেছি।
একই কথা কথা বলেন শফর আলী গাজী, তার ১২ বিঘা জমি রোপনের জন্য ৮ বস্তা বীজ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি নতুন করে আবার বিলে ৫ বস্তা বীজ ধান ফেলেছে।
পশ্চিম ভান্ডারপোল বিলের কৃষক মাওঃ জালাল উদ্দীন বলেন, আমি প্রতিবছর ধান রোপন করে থাকি এবছর ডের বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছি। বাম্পার ফলন পাওয়ার আশায় আছি। কয়রা সদর ইউনিয়নের কৃষক মাষ্টার আব্দুল খালেক জলবদ্ধতার কারণে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। পাতা কিনে ধান রোপন করবো।
মাথা ভাংগা বিলের কৃষক মোঃ রাশেদুজ্জামান ( বকুল) আমি ২ /১ দিনের মধ্যে শ্রমিক নিয়ে ধান রোপন করবো। কিন্তু শ্রমিকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান রোপনে একটু দেরি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ ( অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, বিগত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতে কিছু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তাদের পুনরায় বীজতলা করা বা চারা সংগ্রহের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কোন সহায়তা আসলে সেটা কৃষকদের মাঝে দেওয়া হবে। তবে আমন আবাদের টার্গেট পূরণে কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, সহযোগিতা ও কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে ।
খুলনা গেজেট/এএজে