চালের বাজারে অস্থিরতা কাটাতে ভারত থেকে চাল আমদানি করা হলেও নিত্য প্রয়োজনীয় এ দ্রব্যটির উপর তেমন প্রভাব পড়েনি। গত দু’সপ্তাহ ধরে চালের বাজার উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে শহরে বসবাসকারী মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে।
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) খুলনা বড়বাজারে কয়েকজন পাইকারি বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা ভারতীয় ভালো মানের মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৫৩ থেকে ৫৪ টাকায়, ২৮-বালাম ৪৬ থেকে ৫৭ টাকা, দেশি সরু মিনিকেট মান ভেদে ৫৫ থেকে ৬২ টাকা, একইভাবে ২৮-বালাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, মোটা ৪০ থেকে ৪৩ টাকা এবং ভাইটেল ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন।
অপরদিকে খুচরা দোকানিরা ভারতীয় মিনিকেট মান ভেদে ৫৮ থেকে ৬২ টাকায়, দেশি মিনিকেট ভালো মানের ৬৪ টাকা, মাঝারি মানের ৫৮ টাকা, স্বর্ণা ৪৫ টাকা এবং২৮-বালাম ৫৬ টাকায় বিক্রি করছেন।
বড় বাজারের এক চাল ব্যবসায়ী জানান, বেসরকারিভাবে চাল আমদানির ঘোষণার পর দু’দিন চালের দাম প্রতি কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা করে কমে ছিল।পরবর্তীতে আবার চালের দাম বেড়ে যায়।তারা ভেবেছিল যে ভারতীয় চাল বাজারে আসলে এর দাম মানুষের নাগালের মধ্যে চলে আসবে।কিন্ত তা হয়নি, বরং হয়েছে উল্টো।সাধারণ ব্যবসায়ীদের চাল আমদানির অনুমতি না দিয়ে দেয়া হয়েছে মিলারদের। মিলাররা এখন সুযোগ বুঝে চালের দাম উর্ধ্বমুখী রেখেছে।
বড়বাজারের অন্য এক ব্যবসায়ী জানান, ভারত থেকে চাল আমদানির পর সেখানকার স্থানীয় বাজারে চালের দাম বেড়ে গেছে। এজন্য তারা বাজারে বেশী চাল তুলছেন না, যদি পরবর্তী পর্যায়ে চালের দাম কমে যায়। তাহলে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। তারা সপ্তহে দু’বার দুই থেকে তিন ট্রাক চাল বেনাপোল বন্দর থেকে আনেন।
ওই ব্যবসায়ী আরও বলেন, খুলনার স্থানীয় মোকামগুলোতে ধানের দামও ওঠানামা করছে। গত এক সপ্তাহে ধানের মন প্রতি দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তাহলে ব্যাপারীরা বেশী দামে ধান ক্রয় করে কম দামে চাল বিক্রি করতে পারবেনা। তাহলে চালের দাম আরো বাড়বে। বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকারের উচিত ছিল ভরা মৌসুমে ধান ক্রয় করে মজুদ করা, তাহলে দেশবাসীর এ অবস্থার সম্মুখীন হতে হতো না। তাই সরকারের এখন উচিত, চাল বেশি করে আমদানি করা, যাতে সরকারি গুদামে মজুদ বৃদ্ধি পায়।
রবিবার বড়বাজারে কথা হয় শাকিল আহমেদের সাথে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। সাত সদস্যের পরিবার তার। মাসে সংসারে তার ৫০ কেজি চালের প্রয়োজন হয়।চালের বাজার উর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণে তাকে প্রতি মাসে দু’বার করে বাজারে আসতে হয়। সংসার চালাতে গিয়ে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থার নিরসনের জন্য সরকারকে বেশি করে চাল আমদানি এবং মজুদ বাড়াতে হবে। তা নাহলে এ সংকট কখনোই কাটবে না।
খুলনা গেজেট/এনএম