খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আমদানির প্রভাব নেই খুলনার ডিমের বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারত থেকে দেশে ডিম আমদানি করা হলেও খুলনায় তার কোন প্রভাব পড়েনি। বরং গত একসপ্তাহে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও সরকার দেশের বাজারে ডিমের ঘাটতি মেটাতে গত ৫ দিন আগে এ পণ্যটি আমদানির ঘোষণা দিয়েছিল।

খুলনা মহানগরসহ ৯টি থানায় প্রতিদিন ৪ লাখ পিচ ডিমের প্রয়োজন হয়। চাহিদা অনুযায়ি খুলনার বাজারে যোগান মেলে ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার পিচের মতো। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ চাহিদা মেটাতে বাগেরহাট ও রাজশাহী থেকে ডিম আনতে হয়। প্রয়োজনের তুলনায় নিত্যপণ্যেও চাহিদা বেশি হলে বেড়ে যায় সে পণ্যের মূল্য।

পোল্ট্রি মালিক সমিতির মহা সচিব ও খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী এস এম সোহরাব হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, আমদের শহরে বাজার ব্যবস্থাপনা নেই। বন্যারর কারণে খুলনার পাইগাছা উপজেলার ৬০ টি মুরগীর ফার্ম পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিন খুলনাসহ ৯টি উপজেলায় ৪ লাখ ডিমের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় ডিমের উৎপাদন কম। খুলনা বিভাগের বাইরে থেকে সোয়া ২ লাখের মতো ডিম বাইরে থেকে আনতে হয়।

তিনি আরও বলেন, লেয়ার মুরগীর বাচ্চার দাম বেড়েছে। আগে ১ দিনের বাচ্চা ক্রয় করা হতো ৩০-৩২ টাকায় এখন তা ক্রয় করতে হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। আবার ওই একদিনের বাচ্চা কোম্পানী থেকে ক্রয় করতে ৩-৪ মাস অপেক্ষা করতে হয়।

তিনি এ প্রতিবেদককে আরও বলেন, মুরগীর মেস খাবারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। ডিমের দাম বৃদ্ধির জন্য দেশী ও বিদেশী কয়েকটি কোম্পানীকে দায়ী করেছেন তিনি । এ সকল কোম্পানী দেশে বাচ্চা উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারগুলোতে ডিমের সরবরাহ করে থাকে। তারা ইচ্ছামতো ডিমের দাম বাড়াচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। তারা সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন যেটি আমাদের মাঠ পর্যায়ের খামারীরা পান না। তারা স্থানীয় খামারীদের সাথে একটা প্রতিযোগীতায় নেমেছেন। যার খেসারত দিচ্ছে জনগণ। তিনি পাইকারীতে ১০০ ডিম ১২৭০ টাকায় বিক্রি করছেন।

তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে ২ লাখ ৩১ হাজার ডিম দেশে আমদানি করা হয়েছে। তার একটিও খুলনায় আসেনি। ডিমের মূল্য কমানোর জন্য তিনি খাবার ও বাচ্চার দাম কমানোর তাগিদ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সরকার যেমন কৃষকদের সার ও ডিজেল ভতুর্কি দেয় সেরকমের সাহায্য করলে তরুণ সমাজ ডিম উৎপাদনে আগ্রহী হবে। ডিম উৎপাদনকারী ফার্মের সংখ্যা বাড়লে চাহিদা অনুযায়ি সহবরাহ বাড়বে এবং এ পণ্যের দাম কমবে।

অপরদিকে পাইকগাছা উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকার খামারী প্রতিষ রায় খুলনা গেজেটকে বলেন, বেশিরভাগ ডিম খুলনায় সরবরাহ করা হয় এখান থেকে। মাঝে বন্যার কারণে এ এলাকার বেশিরভাগ ডিম উৎপাদনকারী ফার্ম পানিতে তলিয়ে যায়। মাচা তৈরি করে সেখানে মুরগী রাখা হয়েছে। খাবারের মূল্য প্রতিবস্তায় ১ মাসের ব্যবধানে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া ১ দিনের মুরগীর বাচ্চ ৯৫-১০০টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। যা ডিমের মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নগরীর ডালমিল এলাকার বাসিন্দা ওসমান গণি বলেছেন, ভারত থেকে ডিম আমদানি করে লাভ কী? খুচরা দোকানগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাদামি রঙের ডিম ১৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।

একই এলাকার ডিম ব্যবসায়ী রাসেল বলেন, সিন্ডিকেট ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে ডিমের বাজার চড়া। বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় মানুষের জীবন এখন অনেক সহজ হয়ে গেছ। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সন্ডিকেট চক্র দাম নির্ধারণ করে, যাতে নজর দেওয়া প্রয়োজন। ব্যবসায়ীদের ডিম কিনে আনা এবং বিক্রি করার মূল্য খতিয়ে দেখতে হবে এবং পাইকারি ও খুচরা বাজারে সমানতালে অভিযান পরিচালনা করতে হবে বলে এ ব্যবসায়ী মনে করেন।

খুলনায় খুচরায় প্রতিপিচ ডিম ১৪ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও সরকার প্রতিপিচ ডিম নির্ধারণ করে দেয় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!