বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্যাপিত হতে যাচ্ছে বাংলা নববর্ষ-১৪৩২। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। আজ সোমবার সকাল ৯টায় শুরু হবে আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পুড়ে যাওয়ার পর সেটি আবার নতুন করে বানাচ্ছেন চারুকলার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শনিবার রাতেই থার্মোকল বা শোলা দিয়ে নতুন করে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি বানানোর কাজ শুরু হয়। নতুন করে তৈরি করা এই ‘মোটিফের’ উচ্চতা হতে যাচ্ছে ১৬ ফুট।
গতকাল সন্ধ্যায় চারুকলা ঘুরে দেখা যায়, শোভাযাত্রার জন্য তরমুজের ফালি, বাঘ, ইলিশ, শান্তির পায়রা ও পালকির মোটিফ প্রস্তুত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুন্দর কাজ হচ্ছে। আশা করা যায়, আমরা মোটিফ তৈরির কাজ শেষ করতে পারব।’
এর আগে গতকাল শনিবার সকালে চারুকলা অনুষদে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ দুটি পোড়া অবস্থায় দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ধারণা, ভোরে সেগুলো আগুনে পুড়ে যায়। এদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছিলেন, ‘আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সেখানে বাধা এসেছে। এ ধরনের কাজে কিছু বাধা আসেই, ষড়যন্ত্র থাকবেই।’
‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের করা হবে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রসহযোগে ৩০ জন শিল্পী সম্মিলিতভাবে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন। বৈশাখের ২ তারিখ চারুকলার বকুলতলায় রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ যাত্রাপালা পরিবেশিত হবে।
সকাল ৮টা থেকে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র ও দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।
শোভাযাত্রায় এ বছর ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নেবেন। এবারের শোভাযাত্রায় থাকবে সাতটি বড় মোটিফ, সাতটি মাঝারি মোটিফ এবং সাতটি ছোট মোটিফ।
পয়লা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা যাবে না এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদের তৈরি মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এইচ