খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু

আবার তৃণমূলে ফিরলেন মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপি ছেড়ে ‘ঘর ওয়াপসি’ করলেন মুকুল রায়। তৃণমূল ভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের উপস্থিতিতে মুকুল এবং শুভ্রাংশুর রায়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন।

যোগদানের পর স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ৪ টায় সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে, শান্তি পেয়েছে। মুকুল ওখানে অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। আগামী দিনে আরও অনেকেই দলে ফিরে আসবেন, এমনই ইঙ্গিত দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নেত্রী স্পষ্ট জানান, যাঁরা নোংরামির সীমা ছাড়িয়েছে, তাঁদের নেওয়া হবে না দলে।

বিজেপিতে থাকতে না পেরেই ফিরে এসেছি। বিজেপি করব না বলেই পুরনো দলে ফিরেছি, বললেন মুকুল।এর আগে শুক্রবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুকুল নিজেও জানান, তৃণমূল ভবনেই যাচ্ছেন তিনি।

২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-তে যোগ দেন মুকুল রায়। তবে ২০১৫ সাল থেকেই মুকুলের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে বৈঠক করায় মুকুলকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করে তৃণমূল। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আগে ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর রাজ্যসভার সদস্য পদ ছাড়েন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী।

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে গেরুয়া শিবিরের হয়ে মুকুল বড় ভূমিকা নিলেও তাঁকে কোনও পদ দেয়নি বিজেপি। কলকাতায় বিজেপি রাজ্য দফতরে একটি ছোট ঘর দেওয়া হলেও কোনও ঘোষিত পদ ছাড়াই কাজ করেন মুকুল।

বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার প্রায় ৩ বছর পরে ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয়। তার আগের ৩ বছরে একের পর এক ইস্যুতে মুকুলের সঙ্গে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্ঘাত লেগেছে। বারবার হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে।

মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপি-তে এসেছিলেন লাভপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরে বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। আরও অনেককেই বিজেপি-তে নিয়ে এসেছেন মুকুল রায়। তাঁদের কেউ কেউ এখন বিজেপি-র সাংসদ।

 

বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেকে বিজেপি-তে যোগ দিলেও তারকা আনার ক্ষেত্রে হাতযশ দেখিয়েছিলেন মুকুলই। তাঁরই হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে আসেন অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত থেকে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়রা। কিন্তু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকেই কিছুটা পিছনের সারিতে চলে যান মুকুল। রাজ্য নেতারা বিরোধিতা করলেও বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অবশ্য মুকুলের সঙ্গেই ছিলেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা যে দিন চার্টার্ড বিমানে করে দিল্লিতে অমিত শাহর বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার জন্য, তখনও অভিভাবক হিসেবে ছিলেন মুকুলই।

বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে অবশ্য সে ভাবে মুকুলকে কাজেই লাগায়নি বিজেপি। তাঁকে কৃষ্ণনগর উত্তরে প্রার্থী করে দেওয়া হয়। ভোটের প্রচারে নিজের কেন্দ্রের বাইরে সে ভাবে বার হননি মুকুল। এমনকি ছেলে শুভ্রাংশুর কেন্দ্র বীজপুরেও তাঁকে সে ভাবে দেখা যায়নি।

নির্বাচনে জয় পেলেও এর পরে মুকুলকে আর রাজ্য রাজনীতির অঙ্গনে দেখা যায়নি। তবে রাজ্য বিজেপি-র কয়েকটি বৈঠকে যোগ দেন। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন মুকুল। সঙ্গে স্ত্রী কৃষ্ণাও। এখনও কৃষ্ণাদেবী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই পর্বে বিজেপি-র পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে যোগযোগ করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ২ জুন কৃষ্ণা রায়কে দেখতে হাসপাতালে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরু হয় মুকুল-জায়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি। অভিষেক হাসপাতালে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কৃষ্ণা রায়কে দেখতে যান দিলীপ ঘোষ। পর দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোন পান মুকুল।

১১ জুন, ২০২১। তৃণমূলে ফিরে গেলেন মুকুল। তবে যাওয়ার আগে একটি বারও বিজেপি-র বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনও কথাই বলেননি তিনি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!