আফিল জুট উইভিং মিলস লিমিটেডের পাটের সুতা কিনে দাম পরিশোধ না করে প্রতারণার মাধ্যমে ১৭ কোটি ৪ লাখ ৯২০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রপ্তানিকারক ও ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আটজনের বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার আফিল গ্রুপের ল্যান্ড অফিসার আবু কালাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ অভিযোগের তদন্ত করে ডিবি পুলিশকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী কাজী ফরিদুল ইসলাম।
অভিযুক্তরা হলেন, ঢাকার বনানীর আরাকা এন্টারপ্রাইজ ও এক্সিলেন্স ইমপেক্স ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী বিবেক সাহা, বিএস শিপিং লাইনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান সৈয়দ আনিসুজ্জামান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম মাহাবুবুর রহমান, সেলস এন্ড মার্কেটিংয়ের সিনিয়র ম্যানেজার লিটন বৈদ্য, এমভি হ্যাপি বি জাহাজের মালিক ও কর্মকর্তা, এমভি সান আলফনসো জাহাজের মালিক ও কর্মকর্তা, এমভি সেলমাস লেনসন (সাবেক এমভি মানাটির) মালিক ও কর্মকর্তা এবং সোনালী ব্যাংক ঢাকা গুলশান লোকাল অফিসের কর্মকর্তা।
মামলায় বলা হয়েছে, আফিল জুট উইভিং মিলস লিমিটেড শতভাগ রপ্তানিমুখি প্রতিষ্ঠান। ২০১০ সাল থেকে নিজস্ব মিল থেকে পাটের সুতা উৎপাদন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুনামের সাথে রপ্তানি করে আসছে। ২০২১ সালে আসামি বিবেক সাহা তার প্রতিষ্ঠান আরাকা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে দুবাইয়ের ভিশন স্টার জেনারেল ট্রেডিং এলসির নামে ৭৯৩ মেট্রিকটন পাটের সুতা রপ্তাানি করবে বলে আফিল জুট উইভিং মিলস লিমিটেড কর্তৃপক্ষকে জানায়। ২০২১ সালের ৬ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত আসামি বিবেক সাহার প্রতিষ্ঠান থেকে ১২টি ক্রয় আদেশ দেয়া হয়। যার দাম ১৭ কোটি ৪ লাখ ৯২০ টাকা। তিনি এ টাকা সিএডি পদ্ধতিতে সোনালী ব্যাংক লোকাল অফিস মতিঝিল শাখার মাধ্যমে পরিশোধ করবেন। পাটের সুতা রপ্তানির প্রয়োজনীয় ডিক্লারেশন ও কাস্টমস ক্লিলিয়ারেন্স সম্পন্ন করে যশোরের শার্শা থেকে আসামি বিবেক সাহার মনোনীত এমভি হ্যাপি বি, এমভি সাল আলফফনসো ও এমটি সেলমাস লেনসন এজেন্ট ও বিএস শিপিং লাইন্স লিমিটেডের চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে অবস্থিত গোল্ডেন কনটেইনারস লিমিটেডের ডিপোতে পাটের সুতা বুঝিয়ে দেয়া হয়। বিদেশি পতাকাবাহী ওই জাহাজে ৩২টি কন্টেইনারে পাটের সুতা লোড দিয়ে আফিল জুট উইভিং মিলস লিমিটেডের অনুকূলে ১২টি বিল অফ লোডিং ইস্যু করে জাহাজ কর্তৃপক্ষ। আসামি বিবেক সাহা পাটের সুতা বিদেশে রপ্তানি করেন। যথাসময়ে রপ্তানি পণ্য খালাসও হয়। এরপর পাওনা টাকার জন্য আফিল গ্রুপের মনোনীত ব্যাংকের মাধ্যমে আসামির সোনালী ব্যাংকের হিসাবে কাগজপত্র জমা দিলে টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকে। একপর্যায়ে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এ বাবদ কোনো টাকা ব্যাংকে জমা দেয়নি। পরে খোঁজ নিয়ে আফিল গ্রুপ জানতে পারে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে পণ্যের দাম আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা। বারবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও আসামিরা টাকা পরিশোধ না করায় তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি