আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনের নেতা আনিস খান খুনের ঘটনায় ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হল কলকাতা। বলা যায় কলকাতার ছাত্র সমাজ মঙ্লবার এই খুনের প্রতিবাদে গর্জে ওঠে। একের পর এক পুলিসের ব্যারিকেড ভেঙে যখন ছাত্রছাত্রীরা মহাকরণ অভিযানের দিকে এগিয়ে যায় তখন কলেজ স্ট্রিটে পুলিস মিছিল আটকাবার চেষ্টা করলে ছাত্র-পুলিস সংঘর্ষ রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কলেজ স্ট্রিট। আন্দোলনকারীরা যখন মহাকরণ অভিযানে প্রায় সফল হতে যাচ্ছেন তখন ছাত্রসমাজকে লাঠি চার্জ করে তাদেরকে শেষে প্রিজন ভ্যানে তুলে পুলিস লালবাজারে নিয়ে যায়। এর পরেও আলিয়া সহ কলকাতার সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা পাল্টা নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় ।
তারা মুখ্যমন্ত্ৰী মমতা ব্যানার্জিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিয়েছেন যে, প্রয়োজনে পশ্চিমবঙ্গ অচল করে দেবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আনিস খুনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার করে সাজা না দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা রাস্তায় থাকবেন।আনিস খুনের ৫ দিন কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। এদিন দুপুর একটায় মিছিল শুরু আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কসার্কাস ক্যাম্পাস থেকে। কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, সেন্টজেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যায় সহ কলকাতার সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এদিন মহাকরণ অভিযানের মিছিলে সামিল। এদিন মিছিলে সামিল হন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। মিছিলে সামিল হয় আই এস এফের নেতা-কর্মীরাও। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এই মিছিলে সামিল হন।
এই মিছিল কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কসার্কাস ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়।মিছিল ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ-হাসপাতাল মোড়, পার্কসার্কাস মোড় , মল্লিকবাজার মোড়,রিপন স্ট্রিট, মৌলালি মোড় , শিয়ালদা ফ্লাইওভার হয়ে কলেজ স্ট্রিট পৌছায় পুলিসের সব ধরনের বাধা বিপত্তিকে ঠেলে। একসময় পুলিস মৌলালি মোড়ে মহাকরণ অভিযানের এই মিছিল আটকাতে গেলেও পুলিসের ব্যারিকেড ভেদ করে মিছিল এগিয়ে। মিছিলের চাপে পুলিস অনেকটাই পিছিয়ে যায়।কলেজ স্ট্রিটে আসার পর মিছিলে দমনপীড়ন শুরু। এদিনের মিছিলের অগ্রভাগে ছিল ছাত্রীরা। মিছিলে কলকাতার নারীসমাজের উপস্হিতি ছিলচোখে পড়ার মতো। এদিন কলকাতার ছাত্রসমাজ গর্জে সত্তরের দশকের ছাত্র আন্দোলনের মতোই।এদিন মিছিল থেকে দাবি ওঠে, আনিসের রক্ত হবেনাকো ব্যর্থ, অবিলম্বে আনিসের খুনীদের গ্রেপ্তার করতে, পুলিস আক্রমণ যত বাড়াবে আন্দোলনের ধার আরো বাড়বে।
আলিয়ার ছাত্রছাত্রীরা সাংবাদিকদের জানান, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় দুর্নীতি নিয়ে ১৪২ দিন ধরে একনাগাড়ে আন্দোলন করে আসছিল। সেই আন্দোলনে গু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন আনিস ভাই। আনিস ভাই নানান সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । তাই তাকে তৃণমূল সরকারের পুলিস পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। তার হাওড়ার আমতার বাড়িতে পুলিস ও তৃণমূলের যোগসাজশ করে ১৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে তার বাড়িতে তাকে খুন করে। একে মোটেই বরদাস্ত করা যাবে না।