বাগেরহাটের শরণখোলায় মারধরের মামলায় মূল আসামীর পরিবর্তে (প্রক্সি) আদালতে জামিন নিতে এসে ফেসে গেছেন আল আমিন তালুকদার নামের এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাট চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নিজেকে মূল আসামী প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থ্যনা করেন ওই ব্যবসায়ী। আদালতের বিচারক ভারপ্রাপ্ত চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ড. মোঃ আতিকুস সামাদ জামিন প্রার্থনা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
প্রক্সি দিতে আসা আল আমিন তালুকদার শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাজার এলাকার সুলতান তালুকদারের ছেলে। রায়েন্দা বাজার এলাকায় তারগার্মেন্টস এর দোকান রয়েছে।
মামলার মূল আসামী উপজেলার পশ্চিম খাদা গ্রামের মৃত আব্দুস ছালাম শেখের ছেলে ফরিদ উদ্দিন মানিক বর্তমানে সৌদি আরব রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ মার্চ বেলা ১১টার দিকে প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক ও তার লোকজন রায়েন্দা এলাকায় বাদী আব্দুস সালাম ও তার ভাইদের জমি দখল করতে যান। এসময় বাঁধা দিলে ফরিদ উদ্দিন মানিকের লোকজন বাদী আব্দুস সালামের লোকজনের উপর হামলা করে। পরবর্তীতে আব্দুস সালাম বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক সহ চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ৩১ মে চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে শরণখোলা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক ছাড়া অন্য আসামীরা আদালত থেকে জামিন নেয়। কিন্তু প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক গোপনে সৌদি আরব পাড়ি জমান।
মামলার বাদী আব্দুস সালাম বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমি মামলা করেছি। তবে প্রবাসীর পরিবর্তে অন্য ব্যক্তি আদালতে হাজির হয়ে কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে হতাশ করেছে। আমি আশাকরি আদালত এই ধরণের প্রতারকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. অনিমা দেবনাথ বলেন, এক আসামীর স্থানে অন্য আসামী আদালতে হাজির হওয়া ও জামিন নেওয়ার চেষ্টা আইনগত ভাবে অনেক বড় অন্যায়। বাদীর মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঈদের ছুটির কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে বলে জানান এই আইনজীবী।
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে, যাচাই-বাচাই করে কারাগার কর্তৃপক্ষও বিষয়টির সত্যতা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা কারাগারের সুপার এ এস এম কামরুল হুদা। তিনি বলেন, বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে।
বাদী পক্ষের আইনজীবীর দাবি এই মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এ্যাড. মনিরুজ্জামান। তবে মনিরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি আইনজীবী থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশ পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম বলেন, আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে আমরা বিয়য়টি অবগত হয়েছি।
খুলনা গেজেট/ এসজেড