আজ ৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস। মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে দেশের প্রথম জেলা হিসেবে যশোর পাক হানাদার মুক্ত হয়। প্রথম শত্রুমুক্ত জেলাতে এবছর এদিনে তেমন কোনো সাড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বল্প পরিসরে যশোর মুক্ত দিবস উদযাপন হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের পূর্ব প্রস্তুতি সভায় করোনা সংক্রমণ এড়াতে স্বল্প পরিসরে দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে মোতাবেক রোববার সকাল ১০টা থেকে শহরের বকুলতলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, যুদ্ধকালীন বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) বাহিনীর প্রধান মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মনি এবং ডেপুটি প্রধান রবিউল আলমের নেতৃত্বে প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট, জেলা জাসদ, এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জেলা সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।
জেলা প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে দিনব্যাপী বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোনো রকম ভিড় বা জন সমাবেশ ছাড়া ম্যুরালে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে ৭ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস উদযাপন করা হতো। পরে মুক্তিযোদ্ধা ও ইতিহাসবিদদের দেয়া তথ্য অনুসারে, ২০১০ সাল থেকে ৬ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস উদযাপিত হচ্ছে। ১৯৭১ এর ৮ ডিসেম্বর যশোর শহরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় মুক্তিবাহিনী। ১০ ডিসেম্বর যশোরের জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ওয়ালিউল ইসলাম। ১১ ডিসেম্বর টাউন হল মাঠে জনসভা হয়। সেখানে মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অফিস-আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় ১২ ডিসেম্বর।