শ্রম খাতের অগ্রগতি দেখতে বিকেলে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশের শ্রম খাতের উন্নয়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (এনআইপি) বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলটির মিশন শুরু হবে ১২ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে। ৬ জনের দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইইউর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা প্যাম্পালোনি। এরই মধ্যে গতকাল ঢাকায় পৌঁছেছেন দলটির চার সদস্য। পাওলার সাথে বৈঠকে ন্যূনতম মজুরি নিয়ে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়টি প্রাসঙ্গিক ভাবেই আসবে।
পাওলা ও তার প্রতিনিধি দলটি ১৩ তারিখ সারাদিনই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। ১৪ তারিখে সকালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি, আইএলও কান্ট্রি পরিচালকের সাথে ব্রেকফাস্ট মিটিং করার কথা রয়েছে। একই দিনে পোশাক কোম্পানিগুলোর ব্যান্ডস, শ্রমিক সংগঠন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করবে। একই দিন বিকেলে আইনমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। দিন শেষ প্রতিনিধিদল রাজধানীর উত্তরায় বৈঠকে বসবেন বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে।
প্রতিনিধি দলটি ১৫ নভেম্বর সরকারের তিনজন তথা বাণিজ্য, শ্রম ও পররাষ্ট্র সচিবের সাথে দীর্ঘ বৈঠকের কথা রয়েছে। যেখানে শ্রম আইন সংশোধনের পরের পরিস্থিতি, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) শ্রম অধিকার সুরক্ষা, সব ধরনের শিশু শ্রম বিলোপ, শ্রমিক বিরোধী সব ধরনের সহিংসতা, নিপীড়ন, হয়রানি, অন্যায্য শ্রম চর্চার নিরসন এবং শ্রম ইউনিয়ন বিরোধী তৎপরতা রোধ, শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত ট্রেড ইউনিয়ন চর্চায় সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার অপসারণ এবং ন্যূনতম মজুরি ও বাধ্যতামূলক শ্রম বন্ধের মতো বিষয়গুলোতে আইএলও সনদ অনুসমর্থনের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবার কথা।
বাংলাদেশের শ্রম অধিকার সুরক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনি ও প্রশাসনিক সংস্কারের ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে শ্রম খাতের উন্নয়নে এনআইপি গৃহীত হয়। ২০২৬ সালের মধ্যে এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারের সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশের এনআইপি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালে। এখন শ্রম খাতের এনআইপি বাস্তবায়নে কতটা অগ্রগতি হলো তা নিয়ে আলোচনা করতেই আসছে ইইউ প্রতিনিধি দলটি। ১৫ তারিখ বিকেলে বাণিজ্যমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের কথা রয়েছে। ঐ দিন রাতেই পাওলা ঢাকা ছেড়ে যাবেন।
১৬ তারিখ ঢাকার কাছেই একটি তৈরি পোশাক শিল্প পরিদর্শন করে বাকি টিম ইউরোপ ফিরবে। ইইউ থেকে যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি পেয়ে থাকে। সেটির পরবর্তী ধাপে যেতে এই সফরটির পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খুলনা গেজেট/এনএম