খুলনা, বাংলাদেশ | ২ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দল ও ধর্মের ভিত্তিতে দেশে কোনো বৈষম্য চায় না জামায়াত
  ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প

আজ ঘরে ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহর নাবিকেরা, অপেক্ষায় স্বজনরা

গেজেট ডেস্ক

জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার প্রায় এক মাস পর গতকাল সোমবার দেশে এসে পৌঁছেছে জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় পণ্যবাহী জাহাজটি কুতুবদিয়ায় নোঙর করে রাখা হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে জাহাজটির ২৩ নাবিকের আজ মঙ্গলবার ঘরে ফেরার কথা রয়েছে।

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ জাহাজ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় বলেন, ‘জাহাজটি সোমবার কুতুবদিয়ায় বন্দর জলসীমায় নোঙর করা হয়েছে। নাবিকেরা সবাই সুস্থ আছেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাল (আজ মঙ্গলবার) আমরা ছোট জাহাজে করে চট্টগ্রামে বন্দর জেটিতে পৌঁছানোর আশা করছি।’

মুক্তিপণ দিয়ে ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি।

গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এই জাহাজ ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। মুক্তিপণ দিয়ে ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। এ হিসাবে আমিরাত থেকে ১৩ দিনের মাথায় জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছাল।

কেএসআরএম গ্রুপ জানায়, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ৫৬ হাজার টন পণ্য চুনাপাথর রয়েছে। এতে প্রায় ১৯০ মিটার লম্বা জাহাজটির ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশের গভীরতার পরিমাপ) বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১২ মিটার। জাহাজটির ড্রাফট বেশি থাকায় কুতুবদিয়ায় প্রথমে কিছু পরিমাণ পণ্য খালাস করা হবে। এরপর পতেঙ্গার কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে বন্দর জলসীমায় আনা হবে। সেখানে বাকি পণ্য খালাস করা হবে। এ জন্য দেশে পৌঁছার পরও নাবিকদের ঘরে ফিরতে একটু সময় লাগছে।

জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, এমভি আবদুল্লাহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করার পর সোমবারই নতুন ২৩ জন নাবিক জাহাজটিতে উঠেছেন। তাঁরা এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে যোগদানের পর জিম্মিদশা থেকে মুক্ত নাবিকেরা দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর মঙ্গলবার এমভি আবদুল্লাহর নাবিকেরা চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালের জেটিতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

স্বজনদের অপেক্ষা যেন শেষই হচ্ছে না

সোমালিয়ার দস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা অবস্থায় ছেলে আইনুল হকের চিন্তায় ঘুম আসত না মা লুৎফে আরা বেগমের। দস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার এক মাস পর আজ সন্তানের সঙ্গে দেখা হবে মায়ের। লুৎফে আরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেকে কখন বুকে জুড়িয়ে নেব, সেই অপেক্ষায় আছি। তাকে ফিরে পাচ্ছি; এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। ছেলের প্রিয় খাবার শুঁটকি ভর্তা, চিংড়ি মাছ রান্না করব।’

এক মাস আগেও চট্টগ্রাম নগরের আসকারদীঘির বাসায় লুৎফে আরা বেগমের দিন কেটেছে উদ্বেগ–উৎকণ্ঠায়। গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে কেএসআরএম গ্রুপের এই জাহাজ জিম্মি করার পর তাঁর উদ্বেগ শুরু হয়েছিল। জিম্মিদশা শুরু হওয়ার পর তখন মায়ের অপেক্ষা ছিল কখন ফোন আসবে ছেলের। আইনুল হক দস্যুদের ফাঁকি দিয়ে সপ্তাহে এক–দুবার মায়ের সঙ্গে কথা বলতেন। দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করতেন।

জিম্মিদশা থেকে নাবিকেরা মুক্তি পাওয়ার প্রায় এক মাস পার হতে চলেছে। এখন প্রতিদিনই হোয়াটসঅ্যাপে সন্তানের সঙ্গে কথা হয় মায়ের। তবু মায়ের মন মানে না। লুৎফে আরা বেগম বলেন, কখন দেখা হবে ছেলের সঙ্গে; অপেক্ষা যেন শেষ হতে চাইছে না।

আরেক নাবিক নুর উদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসের খুশির শেষ নেই। জান্নাতুল ফেরদৌস থাকেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায়। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আড়াই বছরের সন্তান সাদ বিন নুরকে নিয়ে মঙ্গলবার বন্দর জেটিতে যাব। অপেক্ষার প্রহর যেন কাটছে না। তবে এবারের অপেক্ষা আনন্দের, খুশির।’

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!