২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৫৭টি প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী ১০ হাজার ৪১টি অবকাঠামোর সমন্বিত উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং ও বিভিন্ন জেলা থেকে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ৩৪৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত ৬টি বহুতল ভবনের উদ্বোধন করবেন। এ ভবনগুলোর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ রূপ পাওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে। ছয়টি বহুতল ভবন প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের খবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করবেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত প্রচেষ্টায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক বহুতল ভবন নির্মিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডক্টর ফরহাদ হোসেন বলেন, নতুন ভবনগুলোর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসিক ও শিক্ষা কার্যক্রম সমস্যার নিরসন হবে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে স্বল্প সময়ে এ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুল প্রত্যাশিত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সভা কক্ষে সংযুক্ত হয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।
ইতোমধ্যে মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন, হাসপাতালের আউট ও ইনডোর, চিকিৎসক ও ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক ভবন, ভেতরের রাস্তা, প্রধান ফটক, ভেতরের আসবাবপত্র, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধনের জন্য মেডিকেল কলেজকে সজ্জিত করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে বেলা ১১টায় মেডিকেল কলেজের সামনে বঙ্গবন্ধু মুর্যাল চত্বরে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া অংশ থেকে সংযুক্ত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ, জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা, কলেজের প্রকল্প পরিচালক ডা. সরোয়ার জাহান চৌধুরী, কলেজের অধ্যক্ষ ডা. দেলবার হোসেনসহ কলেজের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিকসহ স্থানীয় সুধীজন।
কক্সবাজার অফিস ও খাগড়াছড়ি প্রতিবেদক জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনসহ ১৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪টি নতুন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর রেশ না কাটতেই মঙ্গলবার আরও ৬৮টি প্রকল্প উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- সিঙ্গেল পয়েন্ট ম্যুরিং প্রকল্প (এসপিএম), যে প্রকল্পটির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আমদানি করা জ্বালানি তেল পরিবহন ও সঞ্চালনে নতুন প্রযুক্তিতে সংযোগ স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র এবং ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন।
খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের উদ্বোধন হচ্ছে আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এটি বাংলাদেশের ১৫তম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম স্থলবন্দর। রামগড় স্থলবন্দরের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) সারওয়ার আলম জানান, প্রধানমন্ত্রী রামগড় ইমিগ্রেশনটি উদ্বোধন করবেন মঙ্গলবার। এ উপলক্ষে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টম থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের সীমান্ত জটিলতার যে সমস্যা ছিল, ইতোমধ্যে সেটি সমাধান হয়ে গেছে। স্থলবন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়নকাজের জন্য প্রায় ২০০ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ডিসেম্বর নাগাদ এ প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে।