চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী হুদাপাড়ায় মোবাইল ফোনে ‘আমি আজমির শরিফ থেকে বলছি’ পরিচয় দিয়ে মাছুরা খাতুন(৫৫) নামের এক নারীর কাছ থেকে প্রতারণা করে নগদ প্রায় পৌনে ৬ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। মাছুরা খাতুন দামুড়হুদা উপজেলার হুদাপাড়া গ্রামের মৃত নজরুল সরদারের স্ত্রী।
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ হারিয়ে বর্তমানে প্রায় নিঃস্ব ওই ভুক্তভোগী। এরপরও ওই প্রতারক চক্র তার কাছে আরও টাকা দাবি করে। না দিলে তার সন্তানের ক্ষতি ও তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে ওই প্রতারক চক্রটি।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে দামুড়হুদা মডেল থানায় মাছুরা খাতুন বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ১১ টা ৪৫ মিনিটে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি আমার মুঠোফোন নম্বরে ফোন দিয়ে আমার নিকট ‘আল্লাহ’ বলিয়া পরিচয় দেয়। বলে ‘আমি আজমীর শরিফ থেকে বলছি, আমি কোন সাধারণ মানুষ না’। তারপর ওই ব্যক্তি আমাকে জায়নামাজ ও তসবিহ কিনতে বলে। আমি জায়নামাজ তসবিহ কিনতে রাজি হলে বিকাশের মাধ্যমে সেই ব্যক্তি নগদ ১ হাজার ৬০০ টাকা নেয় । পরবর্তীতে অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার গ্রামের নিকটবর্তী শাহিন ও সুইটের বিকাশের দোকান হইতে ৫৬ হাজার টাকা, নগদ ৭২ হাজার ৬ শত টাকা ও ৪ চার লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা বাজারস্থ মসজিদের সঙ্গে একটি কাঠালগাছের গোড়ায় নগদ ১৫ হাজার টাকাসহ স্বর্ণের ২ জোড়া হাতের রুলি বালা, স্বর্ণের ৪ জোড়া কানের দুল, ৩টি স্বর্ণের চেইন প্রতারণা করে নেয়। অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তি প্রতরণামূলক আমার নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার সব হাতিয়ে নিয়ে সর্বস্ব লুট করে নিয়েছে।
ভুক্তভোগী বলেন, পরে অজ্ঞাতনামা ওই নাম্বারে থেকে আরও টাকা চাওয়া হয়। না দেওয়ায় ওই ব্যক্তি বলে, আমার সন্তানের ক্ষতি করে দেবে এবং পরিবারের লোকজনের উপর একের পর এক ক্ষতি করতে থাকবে। ‘তুই আমাকে কিছুই করতে পারবি না। যদি আমাকে মোটা অঙ্কের টাকা না দিস তাহলে তোকে জীবনের মতো শেষ করে ফেলবো’, এ মর্মে হুমকি প্রদান করতে থাকে। আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, মাছুরা খাতুন নামের এক নারীর একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমার মনে হয় কোন প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে তার সর্বস্ব লুট হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সাথে তদন্ত চলছে। আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।