নিম্নচাপের কারণে আজও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ঝড়বে। আগামীকাল সোমবার থেকে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসবে। একই সঙ্গে দিন ও রাতে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে গতকাল শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীসহ সারা দেশে দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপকূলীয় এলাকার সঙ্গে ঢাকার লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বৃষ্টিপাতের কারণে কক্সবাজারে পাহাড় ধসে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ ও পরে গভীর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। যশোর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এটি সামান্য পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাংশে অবস্থান করছিল। তিনি জানান, এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারা দেশে চলমান বৈরী আবহাওয়া ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে ২ নম্বর সংকেত এবং সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়। এ ছাড়া নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ থাকার কারণে এবং যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকা থেকে হাতিয়া ও বেতুয়াগামী এবং বেতুয়া ও হাতিয়া থেকে ঢাকাগামী, ঢাকা থেকে খেপুপাড়া এবং খেপুপাড়া থেকে ঢাকাগামী—এই তিনটি উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর থেকে মুন্সীগঞ্জ ও মতলব, বরিশাল নদীবন্দর থেকে বরিশাল উলানিয়া, বরিশাল কালীগঞ্জ, বরিশাল কাচারীখাল, ভোলা নদীবন্দর থেকে ইলিশা-মজু চৌধুরী হাট, আলেকজান্ডার-হাকিম উদ্দিন নৌপথ, মনপুরা-তজুমদ্দিন নৌপথে লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে পটুয়াখালী নদীবন্দর থেকে গলাচিপা-চরমোন্তাজ, গলাচিপা-চরবেষ্টিন, গলাচিপা-লক্ষ্মীরচর, উলানিয়া-চরমোন্তাজ, চিকনীকান্দি-চরমোন্তাজ নৌপথের নৌযান এবং বোয়ালিয়া-কোড়ালিয়া নৌপথের স্পিডবোট বন্ধ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম দপ্তরের নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন কুমিরা-গুপ্তছড়া, বাঁশখালী-কুতুবদিয়া, পেকুয়া-কুতুবদিয়া, কক্সবাজার-মহেশখালী, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন, নোয়াখালী-হাতিয়া, চট্টগ্রাম-হাতিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সব নৌপথের নৌচলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে আরিচা-পাটুরিয়া-কাজিরহাট নৌপথের সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশুগঞ্জ-ভৈরববাজারসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে বৈরী আবহাওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী নৌযানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখাতে বলা হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।