যুক্তরাজ্যে রেকর্ড ভাঙা তাপপ্রবাহের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় লন্ডনের দমকল কর্তৃপক্ষ রাজধানীজুড়ে ‘জরুরি অবস্থা’ জারি করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড মঙ্গলবার বলেছে, শহরের বিভিন্ন স্থানে কয়েক ডজন অগ্নিনির্বাপক ইঞ্জিন মোতায়েন করা হয়েছে। পূর্ব লন্ডনের গাছপালায় লাগা আগুন নেভাতে অন্তত ৩০টি ইঞ্জিন পাঠানো হয়েছে। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরে গেছে।
দমকলকর্মীরা বাসিন্দাদের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছেন। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছে ফায়ার ব্রিগেড।
মেয়র সাদিক খান পরিস্থিতিকে জটিল বলে আখ্যা দিয়ে মঙ্গল ও বুধবার পার্ক, ব্যক্তিগত বাগান এমনকি আঙিনায় বারবিকিউ করা থেকে লোকজনকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ইতিহাসে এই প্রথম ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা দেখল ব্রিটেনবাসী। এর আগে দেশটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৯ সালে ব্রিটেনের কেমব্রিজ শহরে এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের ফলে সৃষ্ট আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
ইউরোপের অধিকাংশ দেশের মতো শীতল জলবায়ুর দেশ যুক্তরাজ্যের জনজীবন চলমান এ তাপদাহে স্বাভাবিকভাবেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে, দেশটির বিভিন্ন শহরের ব্যস্ত জনসমাগমপূর্ণ স্থানগুলো গত তিন-চার দিন ধরে ফাঁকা। বিভিন্ন চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ তাদের পশু-পাখিদের তাপের আঁচ থেকে মুক্ত রাখতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।
খাবার ও কনফেকশনারির দোকানগুলোতে আইসক্রিম ও ঠান্ডা কোমলপানীয়ের দাম বেড়ে গেছে। ফ্যান ও এসির চাহিদা বাড়ছে ব্যাপকভাবে। ইতোমধ্যে দেশটির পার্লামেন্টের এমপি সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের কোট বা জ্যাকেট পরিধান না করার পরামর্শ দিয়েছে ব্রিটেনের সরকার।
ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাজ্যের যাতায়াত ব্যবস্থাও মূলত রেল ও মেট্রোট্রেন নির্ভর। কিন্তু গত কয়েকদিনের তাপদাহে যুক্তরাজ্যের রেল লাইনগুলো বেঁকে যাওয়ায় রেল পরিষেবা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে দেশটির সরকার।