ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সিন্ডিকেট করার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘আগামী ১০ দিন আপনারা পেঁয়াজ কেনা বন্ধ রাখেন। দেখবেন দাম কমে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘ভারত হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় আমরা চাপে পড়ে গেছি। গত বছরও ভারত এটা করেছে। ভারতের এ কাজের পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে কি না, তা আমার জানা নেই।’
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত ডব্লিউটিওর নীতি ভঙ্গ করছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখব। আগামী এক মাস মানুষকে পেঁয়াজ খাওয়ার বিষয়ে ধৈর্য ও সহনশীল হতে হবে। মানুষ সহনশীল হলে দাম স্বাভাবিক হবে। দয়া করে এক মাস সাশ্রয়ী হোন।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘প্যানিক সৃষ্টি করে ব্যবসায়ীরা সুবিধা নিচ্ছে। এখন যাদের প্রয়োজন এক কেজি, তিনি কেনেন ১০ কেজি। এটাই সমস্যা।’ আগামী ১০ দিন কেউ পেঁয়াজ না কিনলে দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ৬ লাখ টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। পেঁয়াজ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনবেন না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে এলসি’র মাধ্যমে ক্রয়কৃত পেঁয়াজ যেগুলো সীমান্ত পার হবার অপেক্ষায় আছে, সেগুলো দু’একদিনের মধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে বলে জানা গেছে। তুরস্ক ও মিসর থেকে টিসিরি’র মাধ্যমে পিয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। অল্পদিনের মধ্যে এগুলো দেশে পৌছাবে। এবার বড় ধরনের পেঁয়াজের মজুত গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে টিসিরি। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের আগেই আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে এগুলো ক্রয় করা হয়েছিল।
ই-কমার্সের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে টিসিবি। এক মাসের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। ভোক্তাগণ পেঁয়াজ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হলে কোন সমস্যা হবে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছরের তুলনায় দেশে এবার প্রায় এক লাখ টন পেঁয়াজ বেশি উৎপাদিত হয়েছে। আগে থেকেই পেঁয়াজের আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতি নজর রাখা হচ্ছিল। সে কারণে টিসিবি’র মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা করা হয় এবং গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ টাকা মূল্যে দেশব্যাপী খোলা বাজারে বিক্রয় শুরু করা হয়, তা আগামী বছর মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
খুলনা গেজেট/এনএম