আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সত্তা ‘ধ্বংস’ করে দিয়ে ‘নতজানু রাষ্ট্রে’ পরিণত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সুচিন্তিতভাবে বাংলাদেশের যে আলাদা সত্ত্বা, আলাদা পরিচিতি সেটাকে তারা ধ্বংস করে দিচ্ছে। বাংলাদেশকে এখন সত্যিকার অর্থেই একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
রোববার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এই অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে ফেলেছে, নির্বাচনের ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার, ন্যুনতম কর্মসংস্থানের অধিকার ধ্বংস করে দিচ্ছে। তারা সমস্ত দেশটাকে লুটপাটের রাজত্বে পরিণত করেছে। একে একে শিক্ষা ব্যবস্থা ধবংস করেছে, একে একে স্বাস্থ্য খাত ধবংস করেছে, অর্থনীতিকে লুটপাটের অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সময় খুব কম। আমাদেরকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিজেদেরকে সংগঠিত করতে হবে। অতি দ্রুত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথের আন্দোলনে নামতে হবে, ক্ষমতাসীন সরকারকে সরাতে হবে। এরা বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’
দেশের বর্তমান ‘সংকট’ উত্তরণে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া কোনো ‘বিকল্প নেই’ বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘এখন যে অবস্থা বা সংকট এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হলে আমাদেরকে আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমস্ত রাজনৈতিক দল ও মতকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যে গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এদেরকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দুর্নীতিতে দেশ ভরে গেছে। ভালো কাজ করায় দুদকের কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনকেই আজ পুরোপুরিভাবে দুর্নীতিগ্রস্থ করে ফেলা হয়েছে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের শিক্ষা হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করা। এই ভাষা দিবসে আমাদের শিক্ষা হচ্ছে আমাদের মাথা নত না করা। এই ভাষা আন্দোলনের শিক্ষা হচ্ছে যদি রুখে দাঁড়ানো যায় সাহসের সাথে তাহলে সেই দাবিকে আদায় করার শিক্ষা।’
ভাষা আন্দোলন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সকলকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে এবং দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
খুলনা গেজেট/এএ