৩টি কৃষি আইন ফেরানোর দাবিতে রক্ত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লিখলেন দিল্লির প্রতিবাদী কৃষকরা। মঙ্গলবার সিংঘু সীমান্তে আয়োজিত একটি শিবিরে রক্তদান করেন কৃষকরা। তারপর সেই রক্ত দিয়ে লেখা হয় খোলা চিঠি। সেই চিঠি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে লেখা। এদিকে এই আন্দোলন ভিন্ন মাত্রা পাচ্ছে রাহুল গাঁধীর সিদ্ধান্তে। দলীয় সাংসদদের নিয়ে আগামী ২৪ ডিসেম্বর কৃষকদের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছেন তিনি।
সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকারও। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরের সঙ্গে আরও এক দফা বৈঠক করলেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। সেই বৈঠক শেষে তোমর বলেন, ‘‘আমরা আশাবাদী খুব তাড়াতাড়ি কৃষক সংগঠনের সঙ্গে কেন্দ্রের ফের আলোচনা শুরু হবে।’’
এত ঘটনার মধ্যেও মঙ্গলবারের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়, কৃষকদের রক্ত দিয়ে খোলা চিঠি। যেখানে লেখা হয়েছে, ‘নরেন্দ্র মোদীজি, সুপ্রভাত। আমরা আমাদের রক্ত দিয়ে এই চিঠি লিখছি। আপনি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী। আমাদের দেওয়া ভোটে জিতেই আপনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনটি আইন পাশ করিয়ে কৃষকদের বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। আপনাকে অনুরোধ করি, এই তিনটি আইন ফিরিয়ে নিন’।
এর পাশাপাশি একাধিক স্লোগানও লিখেছেন কৃষকরা। তাঁরা লিখেছেন, ‘কালা কানুন ফিরিয়ে নিন’, ‘কালা কানুন বাতিল করতে হবে’।
সিংঘু সীমান্তে মঙ্গলবার প্রায় শতাধিক কৃষক রক্তদান করেন। সেখান থেকেই রক্ত নিয়ে পোস্টার লেখা হয়। এর আগে একের পর এক চিঠি লিখছে কেন্দ্রীয় সরকার। সর্বশেষতম চিঠি নিয়ে কৃষকদের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে বুধবার আলোচনায় বসবেন কৃষকরা। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বিক্ষুব্ধ কৃষক সংগঠনের সূত্রে খবর।
দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সংস্থাকে বলা হয়েছে, ‘‘প্রতিবাদরত কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না বেরিয়ে যায় সে দিকে নজর রাখছে পুলিশ।’’
নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা পুলিশ জানালেও ক্রমে যেন ক্ষোভ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যে। মঙ্গলবার সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল আবারও। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের যাত্রাপথের মধ্যেই কালো পতাকা দেখালেন কৃষকরা। কনভয়ের রাস্তা আটকানোর চেষ্টাও করেন তাঁরা। কিন্তু পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়।
কৃষকরা এখনও তাঁদের অবস্থানে অনড়। তাঁরা বারবার বলছেন, তিনটি কৃষি আইন বাতিল না করলে দিল্লির আন্দোলন মঞ্চ ছেড়ে যাবেন না তাঁরা। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক আলোচনা করা হলেও এখনও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি।
খুলনা গেজেট/এনএম