যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে এবার আইনজীবী সৈয়দ কবীর হোসেন জনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এরআগে আইনজীবী সৈয়দ কবীর হোসেন জনির বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আদালতে মামলা করেন এক নারী। এ মামলার পেছনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন সরাসরি জড়িত বলে অ্যাড. জনি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের মা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য তাছলিমা ইসলাম অ্যাড. জনির বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির অভিযোগের তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।
জনির বিরুদ্ধে এ মামলার পরই আইনজীবীরা একট্টা হয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনে জড়ো হন। এসময় তারা মামলার প্রতিবাদ করেন। পরবর্তীতে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এক হয়ে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জনি বলেন, সম্প্রতি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, আমি বাদী পক্ষের আইনজীবী। এর প্রতিবাদে রাজপথে আন্দোলনও করেছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন একজন বয়স্ক মহিলাকে দিয়ে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে নিজে আদালতে উপস্থিত থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছেন। আমার নামে শ্লীলতাহানির যে মামলা করা হয়েছে, সেটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ওই নারীকে আমি চিনি না। তিনি আমার মাতৃসমতুল্য নারী। একটি পক্ষ আমার সম্মান ক্ষুন্ন ও হেয় প্রতিপন্ন করতে এ মামলা করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রী যশোর জেনারেল হাসপাতালের ট্রেনি মেডিকেল অফিসার। বুধবার সকালে শহিদুল ইসলাম মিলন হাসপাতালে গিয়ে আমার স্ত্রীকে শাষিয়েছেন। আমি বিষয়টি জানার পর উর্ধধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তিনি বলেন, শহিদুল ইসলাম মিলন যদি আমাদের দুর্বল ভাবেন, তাহলে তিনি ভুল ভাবছেন। আমরা যশোরের আইনজীবীরা এখনো ঐক্যবদ্ধ আছি। মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লাগতে এলে আমরাও মাঠে নামতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, যশোর আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য নজরুল ইসলাম, মোজাফ্ফর হোসেন মোহন, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক জুলফিকার আলী জুলু, দিলিপ কুমার রায়, গাজী মোহাম্মদ মাহাফুজুর রহমান, ইমদাদুল হক ইমদাদ, গোলাম নবী, সিরাজুল ইসলাম লেন্টু, বেনজির আহম্মেদ তপু, উদায়ন বিশ্বাস, হাদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।
এদিকে, ওই নারী তার মামলায় উল্লেখ করেন, অ্যাড. জনি প্রায় তার বাড়িতে যেতেন ও আইনি পরামর্শ দিতেন। গত ১০ জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে জনি তার বাড়িতে যান। এসময় বাড়িতে কেউ ছিল না। আলোচনার একপর্যায়ে জনি তার শ্লীলতাহানী ঘটান।
উল্লেখ্য, যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে মারপিটের অভিযোগ ওঠে আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে আইনজীবীরা তার বিরুদ্ধে প্রথমে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। পরবর্তীতে শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল। সর্বশেষ বুধবার মিলনের বিরুদ্ধে আরেক আইনজীবী সংবাদ সম্মেলন করলেন। এসব ঘটনায় উত্ত্যপ্ত এখন যশোর।
খুলনা গেজেট/কেডি