ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজার সম্পন্ন না করেই প্রসূতিকে ফেলে চলে গেলেন এক চিকিৎসক।
বুধবার (২৩ জুন) সন্ধ্যায় ওই প্রসূতিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে ঢাকায় পাঠানো হয়। এর আগে দুপুরে পৌর এলাকার জেলরোডে আল খলিল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। অন্তঃসত্ত্বা রিক্তা আক্তার জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শাকিল মিয়ার স্ত্রী।
স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, অন্তঃসত্ত্বা রিক্তাকে বুধবার অস্ত্রোপচারের জন্য জেলা শহরের ওই হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় গাইনি চিকিৎসক সাময়মা রহমান ইমার ওই প্রসূতিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিতে বলেন। পরে তাকে দুপুরে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার শুরু করেন চিকিৎসক।
এ সময় চিকিৎসক দেখেন আল্ট্রাসনোগ্রাফির সঙ্গে রোগীর গর্ভের অবস্থার কোনো মিল নেই। তাই রোগীকে অর্ধেক অপারেশন করে থিয়েটারে ফেলে চিকিৎসক চলে যান। অর্ধেক অস্ত্রোপচার করার কারণে রক্তক্ষরণের ফলে প্রসূতি রিক্তার অবস্থা খারাপের দিকে যায়। এই অবস্থায় প্রসূতির স্বজনরা জানতে পেরে হাসপাতালে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে চলে হুলুস্থুল। এরই মধ্যে ঘটনাটি জেলা শহরে ছড়িয়ে পড়লে সদর মডেল থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অর্ধেক অপারেশন করা প্রসূতিকে ব্যান্ডেজ করে অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চিকিৎসক সায়মা রহমান ইমার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খলিল বশির মানিক বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা নারীকে সকালে শহরের অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করলে রিপোর্ট ভালো আসে এবং সেই রিপোর্ট নিয়ে আল খলিল হাসপাতালে চলে আসে অস্ত্রোপচারের জন্য। কিন্তু যখন চিকিৎসক সায়মা রাহমান ইমা অস্ত্রোপচার করা শুরু করে তখন দেখেন যে রিপোর্টের সঙ্গে বাচ্চার অবস্থান ঠিক নেই। রোগীর পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা হাসপাতালে ঝামেলা করে। পরে আমরা নিজ দায়িত্বে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাই।’
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে গর্ভবতী নারীকে ঢাকায় অ্যাম্বুলেন্সে পাঠানো হয়। তবে ভুল চিকিৎসার বিষয়ে কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
খুলনা গেজেট/ টি আই