শনিবার ভোররাত থেকে অসুস্থ কলকাতার অভিনেত্রী ও তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। এমনকি বাড়িতে চিকিৎসক পর্যন্ত ডাকতে হয়েছে। চার দিন আগে করোনার টিকা নিয়েছিলেন মিমি। পরে জানা যায়, সেই টিকা ছিল ভুয়া। অসুস্থতা তারই প্রভাব কি না—এ নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে।
যদিও গত বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় মিমি চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, টিকার নামে তাঁকে যা দেওয়া হয়েছে, সেটা ভুয়া ছিল, কিন্তু তিনি সুস্থ আছেন। যাঁরা ওই ক্যাম্প থেকে টিকা নিয়েছেন, তাঁদেরও তেমন কিছুই হবে না বলে প্রত্যাশা করেছেন মিমি।
পরে গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমকে মিমি বলেন, ‘পৌরসভার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মুখে খবরটা পাওয়ার পরেই আমি চিন্তায় পড়ে যাই। চিকিৎসককে ফোন করি। তিনি বলেন, এটা একধরনের অ্যান্টিবায়োটিক, যেটা পানিতে গুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পেট ও মূত্র সংক্রমণে এই ওষুধ দেওয়া হয়। খুবই কড়া ওষুধ। পানিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সম্ভবত সে রকম ক্ষতি করবে না।’
এই অভিনেত্রীর আগে থেকেই গলব্লাডারের সমস্যা ছিল। এখন তাঁর রক্তচাপ কমে গেছে। পেটে ভীষণ ব্যথা। এ ছাড়া পানিশূন্যতাও ভুগছেন। ভোররাতে এতই অসুস্থ হয়ে যান যে বাধ্য হয়ে পরিচারিকাকে ফোন করে ডাকেন। স্থানীয় গণমাধ্যমকে মিমি বলেন, ‘খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছি। ভোররাত চারটা থেকে পেটে ব্যথা। সকাল ছয়টায় ডাক্তার আমার বাড়িতে আসেন।’
চিকিৎসক তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তির কথা বললে রাজি হননি মিমি। বাড়িতেই চলছে চিকিৎসা। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। ডাক্তার তাঁকে বাড়িতেই সম্পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন। মোবাইল ফোন দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত এই অভিনেত্রী।
গত মঙ্গলবার কসবার নিউমার্কেট এলাকায় একটি কোভিড-১৯ টিকা ক্যাম্প উদ্বোধন করে সেখানেই টিকা নেন মিমি। বিশেষভাবে সক্ষম শিশু ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের টিকা দেওয়ার জন্য ওই ক্যাম্প চালু করা হয়। আমন্ত্রণ পেয়ে মিমি সেখানে হাজির হন এবং অন্যদের উৎসাহিত করতে ওই ক্যাম্প থেকে নিজেও টিকা নেন। টিকা ক্যাম্পটির উদ্যোক্তা দেবাঞ্জন দেব।
সংবাদমাধ্যমকে মিমি জানিয়েছেন, ‘কাজটিকে উৎসাহিত করতে আমি সেখানে গিয়েছিলাম, ওখানে নিজেও ভ্যাকসিন নিই। কিন্তু ফোনে কোনো মেসেজ না আসায় আমার খটকা লাগে।
সার্টিফিকেট চাইলেও তারা জানায়, সেটা বাড়িতে পৌঁছে দেবে, কিন্তু দেয়নি। পরে অফিসের লোক গিয়ে খোঁজ করায় বলেছে, তিন থেকে চার দিন সময় লাগবে। এরপরই বুঝতে পারি, নিশ্চয়ই বিষয়টার মধ্যে অন্য কোনো ব্যাপার আছে।’ এরপর মিমি নিজে ওই ক্যাম্প থেকে টিকা গ্রহণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানান, তাঁদের অভিজ্ঞতাও একই। এরপরই প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মিমি।