বাংলাদেশ জামায়াতে ইসরামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, যৌবনকাল আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রত্যেক মানুষের অন্যতম নিয়ামত। এ নিয়ামতের কদর করা যুবকের দায়িত্ব।
রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেলে কাছারী বাড়ী বাজার সংলগ্ন বালুর মাঠে কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী যুব বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, যৌবনকালের দাবি হলো আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলা এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দেখানো পথে ও কল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত থেকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য মজবুত কদমে বলিষ্ঠতার সাথে এগিয়ে যাওয়া। এটা ঠিক যে, যুবকদের বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যত বাধা-বিপত্তিই আসুক না কেন, তা উপেক্ষা করে আল্লাহর গোলামিয়াতের পথে থাকতে হবে। জীবন দর্শন হিসেবে ইসলামী আদর্শ আজ বিকশিত হচ্ছে। এ আদর্শকে সামনে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব যুবকদেরই নিতে হবে।
উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন সভাপতি মাস্টার নূর কামালের সভাপতিত্বে ও মাওলানা সুজা উদ্দিনের পরিচালনায বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যক্ষ গাউসুল আজম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ওয়ালী উল্লাহ, অধ্যাপক নুরুজ্জামান, কয়রা উপজেলা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান ও সেক্রেটারি মাওলানা শেখ সাইফুল্লাহ। এছাড়া বাগালি ইউনিয়ন আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম, কয়রা সদর ইউনিয়ন আমীর মো. মিজানুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, কয়রা বাজার সভাপতি সরদার জুলফিকার আলম, উত্তর বেদকাশির সাবেক আমীর মাওলানা শাহাদাত হোসাইন, যুব বিভাগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম ও ছাত্র আন্দোলনের বৈষম্য বিরোধী সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন রাতুল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ শোষণ, শাসন, আর চরম বৈষম্যের শিকার। এ দেশে বিভিন্ন জাতি ধর্ম ও গোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে । দীর্ঘ বছর ধরে তারা সৌহার্দ্য সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস করছে। কিন্তু স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সরকার সেই সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টার মাধ্যমে ধর্মের এবং জাতিগত বৈষম্য সৃষ্টি করে বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ছায়াতলে সকল ধর্মের বর্ণের মানুষ-ই নিরাপদ। এ জন্য বাঙালি হিসেবে সভ্য, সুশৃঙ্খল জাতিতে রূপান্তর করতে শ্রেণিগত বিভাজন এবং সংঘাতের রাজনীতি কোন ভাবেই কাম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বৈষম্য মুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই। কেবল ইসলামের বিধানের মধ্যেই রয়েছে সকল সমস্যার সমাধান। পারস্পরিক সম্প্রীতি রক্ষায়, সামাজিক বৈষম্য দূর, জাতিগত সহাবস্থান বজায় রাখা এবং ধর্মীয় সংস্কৃতি নিশ্চিত করণে ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনা রয়েছে। যা-বাস্তবায়ন করা গেলে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, মানবতার মুক্তি ও একটি কল্যাণকামী ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সকলকে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ঈমানের দাবি পূরণ ও আখিরাতে নাজাতের জন্য শপথের আলোকে নিজেদের মান সংরক্ষণ করতে হবে। এজন্য তিনি সকলকে নিয়মিতভাবে কুরআন-হাদিস বেশি বেশি অধ্যয়ন করে তার আলোকে নিজেদের জীবন গড়ার তেলার আহ্বান জানান। দেশের সেবা ও মানবতার কল্যাণে জামায়াতে ইসলামী জাতীর কল্যাণে কাজ করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শহীদের রক্তে ভেজা এই সবুজ ভূখন্ডে দীন প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজকে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখতে হবে। আর সেই ভূমিকা পালন করতে পারলেই বাংলাদেশে ইসলামের বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
খুলনা গেজেট/এএজে