ডিসি সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সেনাবাহিনীর প্রধান বলেন, ‘আমরা সোনার বাংলা গড়ার যে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগোচ্ছি, সেখানে সামরিক প্রশাসনের সঙ্গে অসামরিক প্রশাসন যদি একসঙ্গে কাজ না করে তাহলে আমরা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না।’
প্রচলিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সঙ্গে অসামরিক প্রশাসনের যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাহিনীটির প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। বলেছেন, সামরিক প্রশাসনের সঙ্গে অসামরিক প্রশাসন মিলে কাজ না করলে সোনার বাংলা গড়ার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না।
রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের প্রচলিত যে দায়িত্বগুলো পালন করে সেগুলো পালনের ক্ষেত্রে অসামরিক প্রশাসনের সহায়তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি নিজেই এখানে এসেছি এটা ইনডিকেট করে যে, আমি এটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছি।
‘আমরা সোনার বাংলা গড়ার যে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগােচ্ছি, সেখানে সামরিক প্রশাসনের সঙ্গে অসামরিক প্রশাসন যদি একসঙ্গে কাজ না করে তাহলে আমরা কিন্তু অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না।’
জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষেত্রগুলো আলোচনা করলাম। আমরা সবাই একমত হয়েছি যে, এটার (যোগাযোগ বৃদ্ধি) কোনো বিকল্প নেই। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বর্তমানে আমাদের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। অসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে আমরা এটাকে ক্যাপিটালাইজড করে আরও এগিয়ে যেতে চাই।’
ডিসিদের কাছ থেকে কোনো প্রস্তাব এসেছে কি না জানতে চাইলে শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্পেসিফিক প্রস্তাব বলতে সে রকম কোনো প্রস্তাব নেই। কিন্তু আমাদের যেসব সিভিল মিলিটারি রিলেশন বাড়ানোর ক্ষেত্রগুলো আছে, সেগুলো আমরা আলোচনা করেছি। কিছু কিছু প্রস্তাব আছে যেগুলো এখনই বললে প্রিম্যাচুরড হয়ে যাবে। আমরা আরও একটু আলোচনা করে দেখব, তারপর ওটাকে বাস্তবায়ন করা যাবে।’
আলোচনায় কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন জানতে চাইলে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার তরফ থেকে যে কোনো কাজ একসঙ্গে করার জন্য একটি পরিবেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভালো পরিবেশের জন্য ভালো সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। আমি ফোকাস করেছি যেন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি হয়। যত কমিউনিকেশন হবে, তত কমিউনিকেশন গ্যাপ কম হবে। কমিউনিকেশন গ্যাপ যত কম হবে, তত আমাদের কাজ করার সুবিধা হবে। এই কথাটা অন্যান্য বক্তব্যের সঙ্গে বলেছি।’
নির্বাচনি মাঠে থাকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা যে ক্ষেত্রগুলো নিয়ে কাজ করি তার মধ্যে প্রথম আমাদের দায়িত্ব হলো দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি ইন এইড সিভিল পাওয়ারে আমরা নেশন বিল্ডিং একটিভিটিজ করি। ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট করি।
‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারে আমরা ল ইনফোর্সমেন্টে সহায়তা করি। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামেও একটি বিশেষ ধরনের দায়িত্ব পালন করছি। আমরা এফডিএমএন ক্যাম্পে কক্সবাজারে দায়িত্ব পালন করছি। আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের কনস্টিটিউশনের মধ্যে থেকেই আমরা বিদেশেও দায়িত্ব পালন করছি।’
সেনাবাহিনীর বেশ কিছু অর্জনও তুলে ধরেন শফিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কুয়েতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বড় সংখ্যক বাহিনী কাজ করে। দেশের জন্য অনেক বিদেশি মুদ্রা নিয়ে আসছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বে এক নম্বর শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে জাতিসংঘে স্বীকৃত হয়েছে।
‘এসব কর্মকাণ্ড করার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি অসামরিক প্রশাসনের সহায়তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অসামরিক প্রশাসন যখনই মনে করবে যে সরকারের নির্দেশনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারবে, আমরা তখনই তাদের ডাকে সাড়া দেব। অবশ্যই তাদের পাশে বসে আমাদের দায়িত্ব পালন করব।’
খুলনা গেজেট/এনএম