চরম অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কায় জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের সহিংস বিক্ষোভের একদিন পর প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকশে এই ঘোষণা দেন।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়।
এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট জানান, জননিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় সেবা অব্যাহত রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরফলে এখন থেকে ওয়ারেন্ট ছাড়াই জনগণকে আটকের ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী।
বিদেশি ঋণ, রিজার্ভ সংকটের কারণে দেশটিতে জ্বালানিসহ খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট মারাত্মক রুপ নিয়েছে। অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য বৃহস্পতিবার কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে সহিংস বিক্ষোভে আহত হন বেশ কয়েকজন। জারি হয় কার্ফিউ। এরপরপরই রাস্তায় নামে সেনাবাহিনী।
এপর্যন্ত অন্তত ৫৩ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। তবে ধরপাকড়ের পরও দেশের অন্যান্য অংশেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানীর রাস্তায় নেমেছেন কয়েকশ মানুষ। এদিকে, দুই পক্ষকেই সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এর আগে, রাজধানী কলম্বোসহ শ্রীলঙ্কায় দিনে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার। জ্বালানি সংকটের কারণে জলবিদ্যুতের ঘাটতি তৈরি হওয়ায় বুধবার এমন ঘোষণা দেয়া হয়। তবে চলতি মাসের শুরু থেকেই দেশটিতে দিনে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
বেশ কিছু দিন ধরেই বৈদেশিক মূদ্রার ঘাটতি দেখা দেয়ায় শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ রকমের অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। যেকারণে, দেশ জুড়ে খাবার এবং জরুরি জিনিসপত্র মজুদ করার প্রবণতা বাড়ায় তৈরি হয়েছে সঙ্কট।
অবস্থা এতটাই খারাপ যে, দু’টি জাহাজে করে বাইরে থেকে তেল এলেও, ডলারের অভাবে তা হাতে নেয়া যাচ্ছে না বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী উদয় গমনপিলা। বিদেশি মুদ্রা না থাকায় কাগজ এবং কালি আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা সরকার। ফলে দেশজুড়ে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের সব পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে!
পাশাপাশি, ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানি তলানিতে ঠেকায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা।