ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ গবেষণার জন্য অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার জয় করেছেন আমেরিকার অর্থনীতিবিদ বেন বারনাঙ্কে, ডগলাস ডায়মন্ড ও ফিলিপ ডাইবভিগ।
সোমবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস ‘এসভেরিজেস রিকসব্যাংক প্রাইজ ইন ইকোনোমিক সায়েন্সেস’ শীর্ষক এ পুরস্কার ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়েই শেষ হলো এবারের সব ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা।
নোবেল কমিটি বলেছে, এই তিন অর্থনীতিবিদের গবেষণা সমাজ কীভাবে আর্থিক সংকট মোকাবিলা করে তা বুঝতে সাহায্য করে। বিশেষ করে তারা সংকটের সময় অর্থনীতিতে ব্যাংকগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়ার উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটিয়েছেন৷ তাদের গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ব্যাংক ধস ঠেকানো কেন জরুরি সেটা তারা দেখিয়েছেন।
নোবেল কমিটি আরও বলেছে, আধুনিক ব্যাংকিং গবেষণা স্পষ্ট করেছে, কেন আমাদের ব্যাংক প্রয়োজন, সংকটের সময় কীভাবে এই খাতকে কম ঝুঁকিপূর্ণ রাখা যায় এবং কীভাবে ব্যাংকের পতন আর্থিক সংকটকে আরও ঘণীভূত করে। বেন বারনাঙ্কে, ডগলাস ডায়মন্ড ও ফিলিপ ডাইবভিগ ১৯৮০-এর দশকে এই গবেষণার ভিত্তি দিয়েছিলেন। আর্থিক বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক সংকট মোকাবিলায় তাদের বিশ্লেষণগুলো বাস্তবতার বিচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে গত বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ডেভিড কার্ড, জোশুয়া ডি অ্যাংগ্রিস্ট ও গুইডো ডব্লিউ ইমবেনস।
চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু হয় গত ৩ অক্টোবর। প্রথম দিন চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল জয় করেন সুইডিশ বিজ্ঞানী এসভান্তে পেবো।
পরদিন ঘোষণা করা হয় পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল। এই বিষয়ে এবার এ পুরস্কার পেয়েছেন ফ্রান্সের অ্যালাঁ আসপে, যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ ক্লাউসার ও অস্ট্রিয়ার আন্টন সেইলিংগার।
এর পরদিন রসায়নেও নোবেল পুরস্কার পান তিন বিজ্ঞানী। ‘ক্লিক কেমিস্ট্রি’ ও ‘বায়োঅর্থোগোনাল কেমিস্ট্রি’র ভিত্তি দিয়ে এই পুরস্কার জয় করেছেন আমেরিকার ক্যারোলাইন আর বারটোজ্জি, কে ব্যারি শার্পলেস এবং ডেনমার্কের মর্টেন মেলডাল।
পরদিন এ বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান ফ্রান্সের লেখক আনি আরনোঁ। সর্বশেষ ৭ অক্টোবর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয় করেন বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালিয়েস বিয়ালিয়াৎস্কি এবং যুদ্ধরত দুই দেশ ইউক্রেন-রাশিয়া ভিত্তিক দুই মানবাধিকার সংগঠন।
আগামী ডিসেম্বরে সুইডেনের স্টকহোমে নোবেল সপ্তাহে ছয় বিভাগে নোবেল বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়া হবে পুরস্কারের পদক, সনদ ও অর্থ। সম্মানজনক এই পুরস্কারের অর্থমূল্য এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার (১১ লাখ মার্কিন ডলার)।
সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তার রেখে যাওয়া অর্থে ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেয়া শুরু হয়। প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে দেয়া হয় বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার।
খুলনা গেজেট/এসজেড