৯ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক যশোরের অভয়নগর উপজেলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল অভয়নগরবাসী। সেই সাথে অভয়নগরের আকাশে স্বাধীনতার সূর্য ওঠে এবং পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় এ অঞ্চলের মানুষ।
অভয়নগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডের আহবায়ক আলি আহম্মাদ খান যুদ্ধের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে অভয়নগরবাসীকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে পর্যায়ক্রমে ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে খড়লিয়ার শ্যাম দারোগার বাড়িতে অবস্থান করেন। সেখান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎখাত করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর জোরালো আক্রমণ চালায়। অভয়নগর, ফুলতলা, কালিয়া ও নড়াইল চার এলাকা থেকে গেরিলা আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রতিরোধ করে।
৬ ডিসেম্বর যশোর জেলা মুক্ত হওয়ার পর ৭ ডিসেম্বর যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এসে অভয়নগরের শিল্পাঞ্চল নওয়াপাড়া রাজঘাট সকল মিল কারখানায় ক্যাম্প গড়ে তোলে এবং বর্বর নির্যাতন চালাতে শুরু করে। ৮ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনী ও হানাদার বাহিনী রাজঘাট ও শেষ সীমানার মধ্যবর্তী স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
এ সময় মেজর জলিলের নেতৃত্বে মিত্র বাহিনী ও মুক্তি বাহিনী টেকা নদী পার হয়ে অভয়নগরে প্রবেশ করেন। তারা যৌথভাবে আক্রমণ করলে পাকিস্তানী বর্বর বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। একপর্যায়ে শিরোমনি ও ফুলতলা এলাকায় পালিয়ে যায়।
৯ ডিসেম্বর অভয়নগরবাসী শত্রু মুক্ত হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত মুক্ত অভয়নগরের হাজার হাজার মানুষ উল্লাসে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে আকাশে স্বাধীনতার পতাকা উড়িয়ে দেয়। সেই সাথে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে অভয়নগরবাসী হয় শত্রু মুক্ত।
তিনি আরও জানান, অভয়নগর মুক্ত দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপি ব্যাপক কর্মসুচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে জাতীয় ও মুক্তিযুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য র্যালি, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
খুলনা গেজেট/ এস আই