যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায় এবার পূরণ হয়নি সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ জেলায় ভালো ফলন হয়েছে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১ হাজার ৩শ ৬০ হেক্টর জমি চাষ যোগ্য থাকলেও সরিষার আবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ৩শ ৪০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু এক টানা বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশার কারণে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ২শ ৬৮হেক্টর সরিষার আবাদ। বাকি জমিতে আশানুরুপ সরিষার আবাদ ভাল হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা উপসহকারী-কৃষি অফিসার নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল।
জানা গেছে, উপজেলার কোদলা, বাহিরঘাট, পালপাড়া, পাকেরগাতি, দেয়াপাড়া, মথুরাপুর, ফকির বাগান, মরিচা, চাকই, পাইকপাড়া, সিঙ্গেড়ী, ভাটপাড়া, বাঘুটিয়া, একতারপুর, ফকিরহাট অঞ্চলের মাঠ গুলোতে সরিষার আবাদ ভাল হয়েছে। অন্য দিকে ভবদহের সুন্দলী, ভাটবিলা, মশিয়াটি, রাজাপুর, রামসরা, ডুমুরতলা, ধোপাদী, কোটা, বারান্দি এলাকার জলাবদ্ধতা থাকার কারণে এই এলাকায় সরিষার আবাদ দেখা যায়নি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ধরনের তেলবীজের মধ্যে অভয়নগরে প্রধানত সরিষার চাষ হয়। এবার ধানের দাম না পেয়ে কৃষকরা বোরোর বদলে সরিষা আবাদে জোর দিয়েছেন। বৈরী আবহাওয়ায় আমন ধান কাটতে দেরি হওয়ায়, বৃষ্টি, ঘন কুয়াশার কারণে সরিষা আবাদ ব্যাহত হয়। এ কারণে উপজেলায় তেলবীজটি আবাদে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তবে ভালো শীত পড়ায় এবার জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় সরিষা আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১হাজার ৩৬০হেক্টর। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৩৪০ হেক্টর। উপজেলা কোদলা ও বাঘুটিয়া এলাকায় সবচেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। ফলন বাড়ানোর জন্য এবার বিএডিসি উন্নত মানের উচ্চফলনশীল জাতের বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করেছে। এসব বীজের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে বারি-১৪, ১৫, ১৭, বিনা-৯ ও সম্পদ জাতের।
এছাড়া কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের সারও বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সরিষার ক্ষেতে ফুল এসেছে, ফল ও দেখা গেছে। দেখে মনে হয়, পুরো মাঠে যেন হলুদ কার্পেট বিছিয়ে দেয়া হয়েছে।
কৃষকরা জানান, এবার সরিষা গাছের বৃদ্ধি ভালো। এতে ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শীত যত বাড়বে, ফলনও তত ভালো হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সামদানি জানান, সরিষা চাষ সফল করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি সরিষা সংরক্ষণের জন্য উপকরণ হিসেবে ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের সরিষা বীজ ও সার দেয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই