যশোরের অভয়নগরে ব্যবসায়ী দেবাশীষকে হত্যা ও ডাকাতি মামলায় ট্রাক ড্রাইভার ফেরদৌস হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। সে খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর গ্রামের সাব্বির হোসেনের ছেলে। যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি গ্রামে তার মামা শ্বশুর আব্দুর রহমানের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।
পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার গোপিনাথপুর এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মিনি ট্রাক (পিকআপ) ও গ্রিল ভাঙার সরঞ্জাম (লোহার রড়, সেলাই রেঞ্জ, স্ক্রু-ড্রাইভার) উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে আদালতে সোপর্দ করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম আসামির জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জবানবন্দিতে ফেরদৌস জানান, পরের পিকআপ চালিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। তার পাশের গ্রামে মল্লিকপুরের সেলিম নামে একজন চুরি ডাকাতির সাথে জড়িত। সেলিম তাকে প্রায়ই এসব কাজে তার পিকআপ ব্যবহারের জন্যে বলতো। করোনার কারণে অর্থনৈতিক মন্দায় তিনি রাজি হয়ে যান। ঘটনার রাতে সেলিমকে সাথে করে তিনি গাড়ি নিয়ে ফুলবাড়ি গেটে আসেন। সেখান থেকে আরও দু’জন গাড়িতে ওঠে। রাত ৯ টায় নওয়াপাড়া থেকে আরও তিনজন ওঠে ওই পিকআপে। এদের মধ্যে সেলিমসহ রানা, সুমন ও মনা ছিল। বাকিদের নাম জানেন না তিনি। পরে তারা নওয়াপাড়া হাসপতালের সামনে নামেন। তিনি নওয়াপাড়ার ভাঙা গেটের কাছে একটা পাম্পে পিকআপ নিয়ে বসে থাকেন। রাত ৪ টায় সেলিম তাকে ফোন করে স্কুলের পাশে যেতে বলেন। সেখানে গাড়ি নিয়ে যান। পরে সেলিমসহ অন্যরা কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে গাড়িতে উঠে চলে আসেন। এ কাজের জন্যে পিকআপ ভাড়া ৩০ হাজার ও তাকে ১৫ হাজার টাকা দেন সেলিম। আদালতকে এসব কথা জানিয়েছেন ফেরদৌস।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া গ্রামের মৃত গৌর সরকারের ছেলে দেবাশীষ সরকার সঞ্জয়ের বাড়িতে ডাকাতি হয়। ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘরে থাকা নগদ চার লাখ টাকা ও ২০ ভরি ৮ আনা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়। যার মূল্য ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় দেবাশীষ সরকার ও স্ত্রী রিপা সরকারকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দেবাশীষের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি অ্যাডভোকেট তপন কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি পিবিআই যশোরের পরিদর্শক দেবাশীষ মন্ডল তদন্ত করেন।
এর আগে গত ২০ মে খুলনার তেরখাদা উপজেলার মোকমপুর গ্রামের মোতালেব খাঁ ওরফে মোতাহের খাঁর ছেলে সেলিম খাঁ ওরফে শহিদুল খাঁ কে আটক করে। এ ঘটনার অপর অভিযুক্ত খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনীমহল গ্রামের মুক্তার শেখের ছেলে নান্টু শেখকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। এ সময় সেলিম খাঁনের কাছ থেকে একটি সোনার আংটি এবং তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক লুন্ঠিত ৭৫.১৮ গ্রাম সোনা গলানো অবস্থায় উদ্ধার করে পিবিআই। খুলনা সোনাডাঙ্গার রিংকু স্টোর নামে একটি সোনার দোকান থেকে এ সোনা উদ্ধার করা হয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই