যশোরের অভয়নগরে জলাবদ্ধতা নিরসন করতে সুন্দলী বাজার সংলগ্ন পাথরঘাটা ডুমুর বিল খালের দু’পাশের খাল পুনরুদ্ধারে কচুরিপনা অপসারণ শুরু হয়েছে। শনিবার (২৫ নভেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জলাবদ্ধতা নিরসন করতে এই অভিযান কালক্রম শুরু হয়।
দীর্ঘদিন ধরে খালে কচুরিপনা জমে থাকায় পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হয়ে উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার ৩৫ হেক্টর জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এর ফলে কৃষকরা ফসলাদি উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছিল। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম জলাবদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছিল এলাকাবাসী। এ কারণে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জলাবদ্ধতা নিরসন করতে ওই কচুরিপানা অপসারণ করা হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম আবু নওশাদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) থান্দার কামরুজ্জামান, নওয়াপাড়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রবিউল হাসান, থানার অফিসার ইনচার্জ এবিএম মেহেদী মাসুদ, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম মল্লিক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান তারু, জেলা পূর্ণবাসন কর্মকর্তা রিজিবুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুশফিকুর রহিম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আঞ্জুমনোয়ারা, তথ্য ও প্রযুক্তি সহকারী প্রোগ্রামার আহসান কবির, ওসি তদন্ত শুভ্র প্রকাশ দাস, সুন্দলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন মাস্টার দীন মোহাম্মদ, ইউপি সচিব শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
এ সময় স্বেচ্ছাশ্রমে অংশগ্রহণ করে দুই শতাধিক বিভিন্ন পেশাজীবীর সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও কলেজ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
জানা গেছে, উপজেলার সুন্দলী, হরিদাসকাটি, রাজাপুর, আমডাঙ্গা, ডহরমশিহাটি, সড়াডাঙ্গা, গোবিন্দপুর, আড়পাড়াসহ অন্তত ১০টি গ্রামের কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা ধান আবাদসহ বিভিন্ন ফসলাদি উৎপাদন করতে ব্যর্থ হচ্ছে ও জলবদ্ধতার কারণে মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। খালে দু’পাশের কচুরিপনা জমে থাকায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য উভয় পাশের খাল থেকে কচুরিপনা অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। কচুরিপনা অপসারণ শুরু করায় এলাকার জমি থেকে পানি কমতে শুরু করে।
উপজেলার সুন্দলী গ্রামের কৃষক পরেশ মণ্ডল, সুধীর ধর, প্রকাশ মন্ডল বলেন, কচুরিপানা অপসারণ শুরু হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। এভাবে পানি কমে গেলে কৃষকরা এবার ধান আবাদ করতে পারবে। জমির উঁচু বেরিতে সবজি চাষ করে কিছুটা টিকে থাকতে পারবে।
উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল বলেন, দু’পাশের খাল থেকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কচুরিপানা অপসারণ কাজ চলায় পানি সরতে শুরু করে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম আবু নওশাদ বলেন, এই খালের অস্তিত্ব ছিল না। এক শ্রেণির মানুষ খালের ভিতরে ময়লা আবর্জনা ফেলে খালের মুখ বন্ধ করে পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্থ করে। তাছাড়া ও কচুরিপনায় ভরে ছিল। যে কারণে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনরুদ্ধার অভিধান অব্যাহত থাকবে। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করে এই সমস্যার সমাধান করতে অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এনএম