বর্ষার শেষ মৌসুমে হঠাৎ অতি বৃষ্টির কারণে চারিদিক থৈথৈ করছে সাদা জল। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, মসজিদ-মন্দির, মাছের ঘেরসহ অসংখ্যা গ্রামের বাড়িঘর। স্কুল ঘর ছাড়াও অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে খোলা আকাশের নিচে। চারিদিক জল ডুবে থাকায় ভবদহত্তোর জনপদ বাস করছে চরম হতাসার মধ্যে। সর্বস্ব হারাতে বসেছে এলাকার মৎস (ঘের) ব্যবসায়ীরা।
চারিকে জল আর জল থাকায় এলাকায় তালের নৌকা (ডোঙ্গা) বিক্রির হিড়িক লেগেছে। নৌকা বিশেষ দাম নিচ্ছে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা।
এদিকে নৌকা বিক্রি করেই সংসার চলছে অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের মৃত: রতন মল্লিকের ছেলে উদয়ন মল্লিক, গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত: অতুল মন্ডলের ছেলে সুনিল মন্ডল, রাজাপুর গ্রামের রজনীকান্ত বক্সীর ছেলে অমল বক্সী। নৌকার ব্যবসায় পরিবারগুলো এখন অনেকটা স্বাবলম্বী। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিরামহীনভাবে কারিগররা তৈরী করে চলেছেন তাল গাছের নৌকা (তালের ডোঙ্গা)। অনেকে আবার ২০ থেকে ২৫ বছর ধরেই করে চলেছেন ব্যবসা।
নৌকা কারিগর উদয়ন মল্লিক, সুনিল মন্ডল ও অমল বক্সীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এই অল্প আয়েই ছেলেমেয়েকে বড় করেছেন, লেখাপড়া শিখিয়ে বিবাহ দিয়েছেন। তুলনামূলক লাভ একটু বেশি করতে গাছ কেনা থেকে শুরু করে নৌকা বানানো পর্যন্ত সবকিছুই তারা নিজের তত্বাবধানেই করেন এবং এভাবে কাজ শেষে বিক্রি করে বেশ লাভবান হন। কাঠের নৌকার তুলনায় তালের নৌকার দাম কম এবং বেশিদিন ভালো থাকে বলে এই নৌকার চাহিদা অনেকটা বেশি।
তারা বলেন, ভবদহের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও চলছে বর্ষা মৌসুমের মতোই নৌকা তৈরী ও বিক্রির কাজ। এবছর দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে নৌকা বিক্রি করতে পেরে সকল কারিগর খুব খুশি।
খুলনা গেজেট/ টি আই