খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযান : শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদসহ গ্রেপ্তার ৪
  এটিএম আজহারের খালাসের রায়ে সই করেছেন ৭ বিচারপতি; মুক্তিতে বাধা নেই
  সীমান্তে নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে খালাস

অভিভাবক নেই কুয়েটে, ১১০০ শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ

একরামুল হোসেন লিপু

এক সপ্তাহেরও অধিক সময় ধরে অভিভাবকহীন দেশের অন্যতম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। উপাচার্যের স্বাক্ষরের অভাবে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১১’শ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, ভাতা এবং ঈদুল আযহার উৎসব ভাতা। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষক, কর্মকর্তারা। বিপাকে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক স্বল্প বেতনের কর্মচারীরা। স্বাক্ষর বাকি থাকায় আউটসোর্সিংয়ের ৩০ জন নিরাপত্তাকর্মী এপ্রিল মাসের বেতন এখনও পায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন কাজের বিলে উপাচার্যের স্বাক্ষরের অভাবে ৬’শ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখা থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের আর্থিক ক্ষমতা উপাচার্যের হাতে । তার স্বাক্ষর ছাড়া এক টাকারও বিল পাস হয় না। প্রতিমাসে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে তিন শতাধিক শিক্ষক, দুই শতাধিক কর্মকর্তা এবং পাঁচ শতাধিক কর্মচারীর বেতনের বিলে স্বাক্ষর করে থাকেন। কিন্তু অনুপস্থিত এবং পদত্যাগ মিলিয়ে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উপাচার্য নেই কুয়েটে। ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলতি মাসের বেতন, ভাতা, ঈদ উৎসব ভাতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের বিলসহ যাবতীয় ফাইনান্সিয়াল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সরকার নতুন উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত এ সমস্যার সুরাহা সম্ভব নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন আউটসোর্সিংয়ের নিরাপত্তা কর্মীর সুপারভাইজার মোঃ সুমন সরদার বলেন, “আমরা স্বল্প বেতনে চাকরি করি। প্রত্যেকের ফ্যামিলি আছে। দুই মাস বেতন বন্ধ। সবাইকে ধার-দেনা করে চলতে হচ্ছে। দোকানদাররা পাওনা টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। বেতন পাই না, এটা কাউকে বললেও বিশ্বাস করে না। সামনে ঈদ ছেলেমেয়ে নিয়ে কি করবো দুশ্চিন্তায় আছি”।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক ড. জুলফিকার হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। উপাচার্যের স্বাক্ষরের অভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিল পরিশোধ বন্ধ রয়েছে। সামনে ঈদ এবং ৩০ জুন অর্থ বছর শেষ হবে।  ঈদের আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিল দিতে না পারলে ঈদের পর তারা কাজ বন্ধ করে দিবে, এমন আভাস দিয়েছে। তিনি বলেন, মাছুদ স্যারকে অব্যাহতি দেয়ার পর, অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য উন্নয়ন কাজের কোন বিলে স্বাক্ষর করেননি। দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যাবে”।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এবিএম মামুনুর রশিদ বলেন, “উপাচার্য না থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন কাজের সাথে সম্পৃক্ত ঠিকাদারগণকে সময়মতো বিল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সময়মত বিল না পাওয়ায় তারা কাজের গতিও কমিয়ে দিয়েছে । এভাবে চলতে থাকলে চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিবে। তিনি বলেন, এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, ভাতা সব বন্ধ রয়েছে। সামনে ঈদ। এমতাবস্থায় দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ নিয়োগ জরুরী হয়ে পড়েছে”।

সংকট নিরসনে অতি দ্রুত একজন যোগ্য এবং কর্মঠ উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানিয়েছে কুয়েট পরিবার।

উল্লেখ্য, শিক্ষকদের অনাস্থা ও আন্দোলনের মুখে ১৯ মে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হযরত আলী দাপ্তরিক কাজের কথা বলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এর দুইদিন পর ২২ মে তিনি পদত্যাগ করেন।

এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৫ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

 

খুলনা গেজেট/এইচ

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!