অত্যাধিক শাসন এবং মাত্রাতিরিক্ত প্রশ্রয় দেওয়া -দুটিই শিশুর জন্য ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু অতিরিক্ত আদর বা শাসনের মধ্যে বড় হয় তাদের মধ্যে আচরণগত কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তার মধ্যে স্বার্থপরতা অন্যতম।
‘সোশ্যাল জাস্টিস প্যারেন্টিং: হাউ টু রেইজ কমপ্যাশনেট অ্যান্টি-র্যাসিস্ট জাস্টিস মাইন্ডেড কিডস ইন অ্যানজাস্ট ওয়ার্ল্ড’ এর লেখক অধ্যাপক ড. ট্র্যাসি ব্যাক্সলে তার লেখায় সন্তান লালনপালনের ক্ষেত্রে কিছু ভুল আচরণ তুলে ধরেছেন। তার ভাষায়, এ ধরনের আচরণ শিশুর বেড়ে ওঠায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন-
শিশুর সব চাওয়াকে হ্যাঁ বলা : শিশু যা চায় সবসময় তা দিলে সে জীবনে প্রত্যাখান বা না পাওয়ার কষ্ট নিতে পারবে না। একজন পরিপক্ক মানুষ তাকেই বলে যিনি অন্যের পছন্দকে সম্মান করবেন। আবার নিজের অপছন্দকে সম্মানের সাথে না বলবেন। সব কিছু চাইলেই যে পাওয়া যায় না এটা শিশুকে বোঝাতে হবে। শিশুকে না এর মুল্য না শেখালে সে বড় হয়ে স্বার্থপর হয়ে উঠতে পারে।
শিশুকে প্রকৃত শিক্ষা না দেওয়া : শুধু জন্ম দিলেই বাবা-মা হওয়া যায় না। শিশু লালনপালন ধৈর্য ও কঠোর পরিশ্রমের ব্যাপার। সন্তানকে এমনভাবে শিক্ষা দিতে হবে যাতে সে শৈশব থেকেই অন্যের অনুভূতিকে সম্মান করতে শেখে। তার মধ্যে নৈতিক মুল্যবোধ তৈরি করতে হবে। তা না হলে সে স্বার্থপরতা শিখবে।
বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে না জানানো : পরিবার ছাড়াও বাইরের পৃথিবীটা কেমন সে সম্পর্কে শিশুকে ধীরে ধীরে জানাতে হবে। পরিবারই যে পৃথিবী নয় এটা তাকে বোঝাতে হবে। তা না হলে বাইরের নেতিবাচক প্রভাব তার উপরও পড়বে। কীভাবে সে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এ সম্পর্কে আগে থেকেই তাকে দিক নির্দেশনা দিতে হবে। এতে শিশুকে বুদ্ধিমান এবং খোলা মনের ব্যক্তিতে পরিণত হতে সাহায্য করবে। এজন্য শিশুর সঙ্গে নানা খবর, সামাজিক মাধ্যমে দেখা কোনো কিছু শেয়ার করতে পারেন। এতে তার জ্ঞানও বাড়বে।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে শেখানো : অন্যের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে আপনার কিছু কম থাকতেই পারে। সেজন্য আফসোস না করে আপনার যা আছে তার জন্য স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। শিশুকেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে শেখান। এতে তার মধ্যেও কৃতজ্ঞতা বোধ বাড়াতে সাহায্য করবে। সে যদি কৃতজ্ঞতা বোধ করতে না শেখে তাহলে বড় হলে সে অসুখী থেকে যাবে।
খুলনা গেজেট/ বিএমএস