ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে এক হাজার ৮৭৪ অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন৷ ২০১৭ সালের পর ছয় বছরের মধ্যে এ বছরই রেকর্ড সংখ্যক মানুষ ভূমধ্যসাগরে প্রাণ হারিয়েছেন৷ মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এক হাজার ৮৭৪ জন অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছেন৷ জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা আইওএম-এর মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্ট বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে৷ খবর ডয়চে ভেলে।
মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এক হাজার ৮৭৪ জন অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছেন৷ গত বছর একই সময়ে এই সংখ্যাটি ছিল এক হাজার ১০৮৷
আইওএম জানিয়েছে, ২০১৭ সালে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে মারা গেছেন দুই হাজার ২৭৮ জন অভিবাসন প্রত্যাশী৷ আর তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে মারা গেছেন দুই ৯৪৬ জন৷
সংস্থাটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরীয় রুটে মোট ২৭ হাজার ৬৩৩ জন মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়েছে৷
তবে প্রকৃত সংখ্যাটি এর চেয়েও বেশি হতে পারে শঙ্কা করছে আইওএম৷ কারণ, ভূমধ্যসাগরে অনেক নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে, যেগুলোর কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না৷ ফলে, ওইসব নৌকায় থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা গণনার বাইরে থেকে যান৷
এ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ ট্র্যাজেডি ছিল গ্রিস উপকূলে ভূমধ্যসাগরের গভীরতম অঞ্চলে অভিবাসীবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনাটি৷ এতে ১০৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে৷ মরহেদ উদ্ধার করা হয়েছে ৮২টি৷ কিন্তু শত শত মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন৷ তবে, প্রকৃত সংখ্যাটি এখনও জানা যায়নি৷
মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয় বিষয়ক সংস্থা (ইইউএএ) জানিয়েছে, সংঘাত, সংঘর্ষ, জলবায়ু বিপর্যয়, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের কারণে উন্নত জীবনের আশায় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ অনিয়মিত অভিবাসনের পথ বেছে নিচ্ছেন৷
গ্রীষ্মকালে এই সুযোগটি লুফে নেয় মানবপাচারে সংশ্লিষ্টরা৷ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপ পৌঁছে দেয়ার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমুদ্র অনুপযোগী নৌকায় তাদের তুলে দেয়৷ কিন্তু ভূমধ্যসাগরের বেশিরভাগ সময় দুর্দশার মুখে পড়ে অভিবাসীবাহী নৌকাগুলো৷ অসংখ্য মানুষ সমুদ্রে ডুবে মারা যান অথবা নিখোঁজ হন৷
খুলনা গেজেট/এনএম