অবশেষে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দিয়েছে সরকার। গত ২৯ মার্চ মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ভেনামি চিংড়ির চাষের অনুমতি দিয়ে মৎস্য বিভাগের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। একই সঙ্গে ভেনামি চিংড়ির চাষের জন্য ‘বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চিংড়ি চাষ নির্দেশিকা’ও অনুমতি দেওয়া হয়। দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়িত হওয়ায় খুলনার চিংড়ি রপ্তানিকারকরা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাধারণ চিংড়ি চাষীরা।
এখন বিশ্বের ৬২টি দেশে ভেনামি চিংড়ি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে এশিয়ার দেশে রয়েছে ১৫টি। বিশ্বে চিংড়ি বাণিজ্যের ৭৭ শতাংশ দখল করে আছে ভেনামি চিংড়ি। বাগদা চিংড়ির তুলনায় দাম কম হওয়ায় বিশ্ববাজারে এর চাহিদা বেশি। এশিয়ার চিংড়ি রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে এতোদিন বাণিজ্যিকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষ নিষিদ্ধ ছিলো।
এর আগে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) অধীনে পরীক্ষামূলকভাবে খুলনার পাইকগাছায় ভেনামি চিংড়ি চাষ শুরু হয়। প্রতিবারই সফলতা পাওয়া গিয়েছিলো।
ভেনামি কি ?
ভেনামি চিংড়ির জাতটি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ভেনামি চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষ ২০০৮ সালে শুরু হয়। এ ছাড়াও এশিয়ার অন্যান্য প্রতিযোগী দেশ যেমন: থাইল্যান্ড ও চীনে ভেনামি চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয় ১৯৮৮ সালে। ফিলিপাইনে এর চাষ শুরু হয়েছে ১৯৮৭ সালে। ভিয়েতনাম ও মিয়ানমারে শুরু হয় ২০০০ সালে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং গ্লোবাল অ্যাকুয়াকালচার অ্যালায়েন্স-এর তথ্য মতে, বিশ্বে ২০১৮ সালে ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে ৩৫ দশমিক ৫ লাখ মেট্রিক টন, বাগদা উৎপাদন হয়েছে ৫ দশমিক ৫ লাখ মেট্রিক টন, গলদা উৎপাদন হয়েছে ২ দশমিক ৪ লাখ মেট্রিক টন। এ ছাড়া অন্যান্য চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ মেট্রিক টন।
এর মধ্যে এশিয়ার চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতে ২০১৮ সালে ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন হয় ২৩ দশমিক ৯১ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৯ সালে এই দেশগুলোতে উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ৩১ দশমিক ১২ লাখ মেট্রিক টন। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান শূন্য।
খুলনা গেজেট/এইচ