অবশেষে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকার আগুন নিভেছে। শুক্রবার (০৭ মে) বিকেল থেকে কোথাও নতুন করে আগুন লাগেনি বা ধোয়া দেখা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসও তাদের অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রপাতি বনের ভেতর থেকে নিয়ে এসেছে। কোথাও আগুন না থাকলেও আরও দুই একদিন ওই এলাকা পর্যবেক্ষনে রাখার কথা জানিয়েছে বন বিভাগ।
বুধবার (০৫ মে) সকালে দাসের ভারানি এলাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এর মাত্র দুই দিন আগে সোমবার (০৩ মে) দুপুরে ওই এলাকার উত্তর পাশে আগুন লেগেছিল। তখন দুই দিনের চেষ্টায় মঙ্গলবার বিকেলে আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও পরের দিন (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টায় আবারও আগুন লাগায় হতবাক হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দুই বারের এই অগ্নিকান্ডে সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকার অন্তত ১০ একর বন ভূমি পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারি পরিচালক মোঃ গোলাম সরোয়ার বলেন, প্রথমবার অর্থাৎ ৩মে থেকে আমাদের তিনটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমরা কাজ শেষ করেছি। আজ সারাদিন আমাদের বন বিভাগ ডাকেনি। তাই আমরা বনের মধ্যে থাকা আমাদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও নিয়ে এসেছি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, আগুনের স্থানে সব সময় বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল। শুক্রবার সকাল থেকে আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষনে ছিলাম। যেসব জায়গায় ধোয়া দেখা গেছে সেখানে রিজার্ভ রাখা পানি দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ আর কোথাও ধোয়া দেখা যায়নি। তাই আমরা মনে করছি আগুন নিভে গেছে। তবে বনরক্ষীরা আরও দুই একদিন জায়গাটিতে পর্যবেক্ষনে থাকবে বলে জানান তিনি।
এদিকে শনিবার সকালে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বিন কবিরসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার সুন্দরবনের আগুন লাগার স্থান পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বিন কবির বাগেরহাটে পৌঁছেছেন। শনিবার সকালে তিনি শরণখোলায় নির্মানাধীন বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করবেন। সেখান থেকে সুন্দরবনে আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে যাবেন।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ বেলায়েতে হোসেন বলেন, বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে আগুন নিভে গেছে। প্রথম বারের আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনে গঠিত তদন্ত কমিটি শুক্রবার থেকে কাজ শুরু করেছে। তাদের রিপোর্ট পেলে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা যাবে।
সোমবার (০৩ মে) দুপুর ১২টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ ও স্থানীয়দের প্রায় ৩০ ঘন্টার চেষ্টায় মঙ্গলবার (০৪ মে) বিকেল ৫টায় আগুন নিভে যায়। পরবর্তীতে বুধবার (০৫ মে) সকালে পূর্বের আগুনের দক্ষিন পাশে আবারও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে গেল ২০ বছরে সুন্দরবনে ২৬ বার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটল।